১০০ কোটি ভ্যাকসিনের মাইফলক ছুঁয়ে খুশি আমজনতা থেকে সরকার। কিন্তু মোদী সরকারের এই ভ্যাকসিন প্রকল্পই ভারতের মানুষের মধ্যে বিভেদ তৈরি করেছে! শুনতে অবাক লাগলেও, মঙ্গলবার এমনই এক পর্যবেক্ষণের কথা শোনাল কেরল হাইকোর্ট। কেন্দ্রীয় সরকারের ভ্যাকসিন প্রকল্প দেশবাসীকে দুইভাগে বিভক্ত করেছে।
কোভ্যাকসিন ও কোভিশিল্ড, দুই ভ্যাকসিন গ্রাহকদের দুইভাগে ভাগ করেছে। কোভিশিল্ড প্রাপকরা সহজেই বিশ্বের যেকোনো স্থানে যাওয়ার সুবিধা পেলেই, কোভ্যাকসিন প্রাপকদের ক্ষেত্রে সর্বত্র যাওয়ার ছাড়পত্র মেলেনি। তাতেই সমস্যায় পড়েছেন অনেক কোভ্যাকসিন প্রাপক। প্রসঙ্গত, এই বিষয়ে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও একাধিকবার দিল্লীর বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন।
এমনি এক মামলার শুনানি চলে কেরল হাইকোর্টে। কোভ্যাকসিন প্রাপক এক ব্যক্তি তৃতীয় ডোজের আবেদন জানায় আদালতে। কারণ, কোভ্যাকসিনের দুটি ডোজ নেওয়া সত্ত্বেও দেশের বাইরে চাকরি করতে যেতে পারছেন না তিনি। তাই তৃতীয় কোনও ডোজ নিয়ে সেই ছাড়পত্র পেতেই মামলা করেন তিনি।
আরও জানিয়েছে, কেন্দ্র যদি এই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে আরও সময় নেয় তাহলে বিদেশে কাজ করার ক্ষেত্রে যে পরিমাণ বেতন পাওয়ার সুযোগ ছিল, তা দেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হতে পারে। উল্লেখ্য, সরকার অগাস্ট মাসে জানিয়েছিল কোভিড ভ্যাকসিনের তৃতীয় ডোজ পরিচালনার ক্ষেত্রে ট্রায়াল চলছে।
সেই মামলার শুনানির সময় বিচারপতি পিভি কুনহিকৃষ্ণানের পর্যবেক্ষণেই উঠে আসে এমন মন্তব্য। প্রসঙ্গত, উক্ত ব্যক্তিটি সৌদি আরবে ওয়েল্ডিংয়ের চাকরি পেয়েও যেতে পারছেন না। কারণ কোভ্যাকসিনের দুটি ডোজ নেওয়া থাকলেও উপসাগরীয় দেশগুলিতে তা অনুমোদিত নয়। এই পরিস্থিতিতে তিনি চাকরি হারাতে বসেছেন। তাই তৃতীয় কোনও ডোজ নেওয়া যায় কিনা, সেই আবেদনই জানান আদালতে।
আদালতের কথায়, ‘সরকার পরিচালিত টিকাকরণ প্রকল্পের কারণে, দেশে দুই ধরনের নাগরিক রয়েছেন- এক যারা কোভ্যাক্সিন পেয়েছেন এবং দুই যারা কোভিশিল্ড পেয়েছেন। প্রথম ক্ষেত্রের প্রাপকদের ওপর চলাচলে কিছু নিষেধাজ্ঞা থাকলেও দ্বিতীয় ক্ষেত্রে প্রাপকদের সেই অসুবিধা ভোগ করতে হয় না।’
এমনকি এর জন্য আবেদনকারী বা দেশের নাগরিকদের মৌলিক অধিকার খর্ব হচ্ছে বলেও মত আদালতের। যদিও মামলাকারীকে তৃতীয় ডোজের অনুমোদন দেয়নি আদালত, তবে কেন্দ্রকে একমাসের মধ্যে মামলাকারীর অভিযোগের প্রতিকারের নির্দেশ দিয়েছে।