বিজেপির পতন যাত্রা শুরু হয়ে গেল। ৪ বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের এই বিপুল জয়ের পরেই এমনই দাবি করেছেন দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেছেন, একুশের ভোটে বিজেপির শেষের শুরু হয়েছিল। আর এই চার বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের এই বিপুল জয় বুঝিয়ে দিয়েছে। ভারত থেকে বিজেপির পতন যাত্রা শুরু হয়ে গিয়েছে।
৪ বিধানসভা উপনির্বাচনে ফলাফল ঘোষণা হয়েছে। খড়দহ, শান্তিপুর, দিনহাটা, গোয়াবা চার কেন্দ্রের উপনির্বাচনেই বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছে। রেকর্ড ভোটে খড়দহ কেন্দ্রে জয়ী হয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। দিনহাটা কেন্দ্রে বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী উদয়ন গুহ।
শান্তিপুর এবং গোসাবা কেন্দ্রেও যথারীতি বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থীরা। যাকে বলে সবুজ ঝড়ে ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে গিয়েছে বিজেপি। খড়দহে ৯৩ হাজারেরও বেশি ভোটে জিেতছেন তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। প্রচারে এসে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন গতবারের চেয়ে চিনগুণ বেশি ভোটে জিতবে তৃণমূল কংগ্রেস। সেই কথাই সত্যি।
কংগ্রেস সেটা করতে পারেনি। কংগ্রেস ব্যর্থ হয়েছে। এদিকে আবার তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন বিরোধী ঐক্য হলে নেতৃত্বে থাকবেন তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী। কারণ গোটা দেশে এখন আওয়াজ উঠেছে েদশকি নেত্রী ক্যায়সি হো মমতা দিদি জ্যায়সি হো। এই নীতিতেই এখন এগোচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস।
চার কেন্দ্রের উপনির্বাচনে দলের এই বিপুল জয়ের জন্য তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলীয় কর্মী এবং প্রার্থীদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। টুইটে তিনি লিখেছেন, ‘আসলে বাংলার মানুষ ষড়ষন্ত্র আর ঘৃণার রাজনীতি নয়, উন্নয়নকেই ভরসা করে। এটা মানুষের জয়। এই জয় বুঝিয়ে দিচ্ছে কীভাবে বাংলার মানুষ ষড়যন্ত্র আর ঘৃণার রাজনীতিকে উপেক্ষা করে উন্নয়ন আর ঐক্যকেই বেছে নিয়েছেন।
‘বাংলাকে উন্নয়নের নয়া উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার আশ্বাসও দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো। তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বিরোধীদের কটাক্ষ করে বিজেপিকে দীপাবলির শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। টুইটে তিনি লিখেছেন, ‘সত্যিকারের বাজি-হীন দীপাবলি।’
তবে ৪ কেন্দ্রের দলের এই বিপুল জয়ের উল্লাসে যেন কেউ বিজয় মিছিল না করেন তার নির্দেশ দিয়েছেন। কারণ উৎসবের মধ্যে এসব হলে সমস্যা হবে সাধারণ মানুষের। তার উপর করোনা সংক্রমণের সম্ভাবনা থাকবে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের এই বিপুল জয়ের পরেও বিজয় মিছিল করা হয়নি। কারণ সেসময় করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ মারাত্মক আকার নিয়েছিল। ২১ জুলাইয়ের অনুষ্ঠান হয়েছিল ভার্চুয়াল।
চার কেন্দ্রের উপনির্বাচনে ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে গিয়েছে বিজেপি। আগের তিন উপনির্বাচনেও একটি কেন্দ্রেও জিততে পারেননি পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেছেন, ভারত থেকে বিজেপির পতন যাত্রা শুরু হয়ে গেল। একুশের ভোট থেকেই বিজেপির পতন শুরু হয়ে গিয়েছিল। চার কেন্দ্রের উপনির্বাচনের ফলাফল তার ইঙ্গিত দিতে শুরু করে দিয়েছে। এবার ভারত থেকেই ধুয়ে মুছে সাফ হবে বিজেপি।
এমনই দাবি করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য বিধানসভা ভোটের পর থেকেই ২০২৪-কে টার্গেট করে অন্যান্য রাজ্যে সংগঠন বিস্তার করতে শুরু করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। ত্রিপুরার মাটিতে সংগঠন ইতিমধ্যেই শক্তিশালী করে ফেলেছেন তাঁরা। গোয়াতেও খোলা হয়ে গিয়েছে পার্টি অফিস। এরপর টার্গেট উত্তর প্রদেশ এবং মেঘালয়। ছট পুজোর দিন উত্তর প্রদেশে যাচ্ছেন তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বিজেপিকে ভারত ছাড়া করার টার্গেট
২০২৪-র লোকসভা ভোটকে টার্গেট করে প্রথমে এগোতে শুরু করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। প্রথম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিরোধী ঐক্যের কথা বলে সব অবিজেপি দলগুলিকে একজোট হওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন। কিন্তু পরে আবার সেই অবস্থান থেকে সরে আসতে দেখা যাচ্ছে তাঁকে। এখন তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী দাবি করতে শুরু করেছেন বিজেপিকে ভারত ছাড়া করার ক্ষমতা একমাত্র তৃণমূল কংগ্রেসেরই রয়েছে।