একুশের বিধানসভা নির্বাচনে বাংলায় ২০০-র বেশি আসন জয়ের স্বপ্ন দেখেছিলেন মোদী-শাহরা। কিন্তু বাংলার জনগণ তাঁদের সেই আশায় জল ঢেলে দিয়েছে। আর তার জেরেই পদ্মশিবিরের দৌড় থেমে গিয়েছিল ৭৭ আসনে। কিন্তু সেই ৭৭ আসনও বিজেপি এখন আর ধরে রাখতে পারছে না। আসন কমে দাঁড়িয়েছে ৭০-এ। কারণ বিজেপির দুই সাংসদ তাঁদের বিধায়ক পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। এবং ৫ বিজেপি বিধায়ক দলবদলে চলে এসেছেন তৃণমূলে।
এর ঠিক এক মাস আগে রাজ্যে ৩টি বিধানসভা কেন্দ্রের নির্বাচনী ফলাফল সামনে এসেছিল। সেখানে বিজেপিকে জমি হারাতে দেখা গিয়েছে। ৩টি কেন্দ্রেই তাঁরা হেরেছিল যেমন তেমনি সামসেরগঞ্জে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছিল কংগ্রেস। এদিন রাজ্যের আরও ৪ কেন্দ্রের উপনির্বাচনের ফলাফল সামনে আসছে। সেখানেও কিন্তু বিজেপির ভরাডুবির ছবিই শুধু ফুটে উঠছে তাই নয়, খড়দহে বিজেপিকে পিছনে ফেলে দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসছে বামেরা। আর এতেই পরিষ্কার বাংলায় দ্রুত জমি হারাচ্ছে বিজেপি।
বস্তুত ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচন থেকেই বাংলার মাটিতে বিজেপির উত্থান শুরু হয়। পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর, কোচবিহার, জলপাইগুড়ি জেলায় বিজেপির সেই জয়যাত্রা রীতিমত চোখে টেনেছিল রাজ্যবাসীর। এরপর উনিশের লোকসভা ভোটে বিজেপির ১৮ আসন প্রাপ্তির পর থেকেই বঙ্গ বিজেপির পাশাপাশি পদ্মশিবিরের কেন্দ্রীয় নেতারাও রীতিমত হুঙ্কার দিতে শুরু করেছিলেন ‘একুশে বাংলায় ক্ষমতায় আসবে বিজেপি’।
যদিও সেই আশা তাঁদের পূর্ণ হয়নি। দৌড় থেমে গিয়েছে ৭৭ আসন পেয়েই। কিন্তু একুশের ভোটে সেই হার এখন বঙ্গ বিজেপিকে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছে। নিত্যদিন দল ছাড়ছেন নেতাকর্মীরা। পাশাপাশি দল ছাড়ছেন সাংসদ ও বিধায়কেরাও। পরিস্থিতি এতটাই সঙ্গিন যে ২০২৬ সালে যখন পরবর্তী বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে তখন বাংলার পদ্মশিবিরে দুই সংখ্যার বিধায়কেরও দেখা মিলবে কিনা তা নিয়েই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে।