দুঃসময় কাটতে চাইছে না পদ্মশিবিরে। শীর্ষ কমিটিতে জায়গা পেয়েই কেন দল ছাড়ছেন নেতারা? এবার এই প্রশ্নেই বঙ্গ বিজেপির উপর চরম অসন্তুষ্ট দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। প্রসঙ্গত প্রথমে দলের সর্বভারতীয় নেতৃত্বের টিমে জায়গা পাচ্ছেন বঙ্গ বিজেপির নেতারা। এবং তার অল্প কিছুদিন পরেই বিজেপি ভেঙে পুরনো দলে ফিরে যাচ্ছেন। এমনটা হচ্ছে কেন? এই প্রশ্ন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের। অস্বস্তি বাড়িয়ে বিজেপির অন্যতম সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছেন, “এঁদের আমি অনেক আগেই সাসপেন্ড করতে চেয়েছিলাম।” রবিবারই বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে ফিরে গিয়েছেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। গত ৭ই অক্টোবর দলের জাতীয় কার্যকরী কমিটির সদস্য, বিশেষ আমন্ত্রিত সদস্য এবং স্থায়ী আমন্ত্রিত সদস্যদের নাম ঘোষণা করেছিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, জাতীয় কার্যকরী কমিটির সেই ৫০ জনের বিশেষ আমন্ত্রিত সদস্যের মধ্যে অন্যতম নামটিই ছিল রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী সপ্তাহে দলের গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় কার্যকরী কমিটির বৈঠক। তার আগে একের পর এক এমন ঘটনা চরম অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছে দিল্লী বিজেপির কর্তাদের।
উল্লেখ্য, এর আগে মুকুল রায়কে দলের অন্যতম সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি করেছিল বিজেপি। কিন্তু তার ঠিক পরেই তৃণমূলে যোগ দেন মুকুলবাবু। এবং তাঁর ছেড়ে যাওয়া সেই পদে বসানো হয় বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য-সভাপতি দিলীপ ঘোষকে। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহল মনে করছে, বাংলায় ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুর ধারেকাছে পৌঁছতে না পেরে এমনিতেই যথেষ্ট বিড়ম্বনায় পড়েছিলেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা। যার জের এখনও কাটেনি। অন্যদিকে, ভোটের ফল প্রকাশের পর থেকে গেরুয়াশিবিরের নেতাদের একের পর এক দলত্যাগের ঘটনাও রীতিমতো উদ্বেগে রেখেছে কেন্দ্রীয় পার্টিকে। আর তাই কাঠগড়ায় উঠেছে বাংলার পদ্ম-নেতৃত্ব।
এপ্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ জানিয়েছেন, “এঁদের দলে নেওয়ার ব্যাপারে আমি অন্তত কোনও ওকালতি করিনি। বরং দলবিরোধী মন্তব্যের জন্য অনেক আগেই রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, সব্যসাচী দত্তদের সাসপেন্ড করতে চেয়েছিলাম। আমি জানতাম যে, এঁরা প্রত্যেকেই সুখের পায়রা। এমনকী দলের কর্মীরাও জানতেন, ভোটের পর এঁরা দলে থাকবেন না। তাই এইসব নেতার উপর ভরসা করা ঠিক হয়নি। যাঁরা দায়িত্ব দিয়েছিলেন, কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করার দায় তাঁদেরই।” দিলীপ জানিয়েছেন, “শুধু সর্বভারতীয় স্তর থেকেই নয়, জেলা এবং রাজ্যস্তর থেকেও দলত্যাগের অনেক ঘটনা ঘটেছে। ক্ষমতায় থাকবেন বলে বিজেপিতে এসেছিলেন। এখন আবার হাতে পায়ে ধরে পুরনো দলে ফেরত যাচ্ছেন।” দলীয় সূত্রের খবর, সর্বভারতীয় কমিটিতে জায়গা দেওয়ার আগে সবসময় যে কেন্দ্রের নেতারা বিজেপির রাজ্য পার্টির সঙ্গে আলোচনা সেরে নেন, এমনটা নয়। বরং অনেক সময়ই নিজেদের অঙ্কে বিশ্বাস করেন। তারই ফল ভোগ করতে হয় পরে।