এবার সারা ভারত সেভ এডুকেশন কমিটির সম্মেলনে জাতীয় শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে অসন্তোষ উগরে দিলেন দেশের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদরা। সিলেবাস নিয়েও কঠোর সমালোচনা করেছেন তাঁরা। ইতিহাসবিদ ইরফান হাবিব বলেন, ইউজিসি’র নতুন সিলেবাসে রামায়ণ, মহাভারত বা পুরাণকে ইতিহাস বলে চালানোর চেষ্টা হচ্ছে। এই সিলেবাস প্রাচীন ভারতের জাতিভেদ প্রথা নিয়েও নীরব। বলা হয়েছে, মুসলিম শাসনের চাপেই জাতিভেদ প্রথা প্রসার লাভ করেছে। যা পুরোপুরি ইতিহাস বিরুদ্ধ। স্বনামধন্য ইতিহাসবিদ রোমিলা থাপার বলেন, “সিলেবাস যাঁরা তৈরি করছেন, তাঁদের এই সম্পর্কিত তথ্যপ্রমাণ আরও বিশ্বাসযোগ্যভাবে সংগ্রহ করতে হবে। আর তা করতে হবে ইতিহাসবিদদের কাছ থেকেই। ইতিহাস মানে কিন্তু স্রেফ রাজায় রাজায় যুদ্ধের কাহিনী বর্ণনা নয়। অতীতে সমাজের পরিবর্তন কীভাবে হয়েছিল বা ভবিষ্যতে কীভাবে হবে, সেই সংক্রান্ত জ্ঞানই হল প্রকৃত ইতিহাস। নতুন সিলেবাসে কি তা আছে?”
পাশাপাশি ইউজিসি’র প্রাক্তন চেয়ারম্যান সুখদেব থোরাট বলেন, “জাতীয় শিক্ষানীতি নাকি সাম্যের কথা বলছে। আসলে ব্যাপারটা উল্টো। এই নীতিতে বৈষম্য বাড়বে। শিক্ষার বেসরকারিকরণের পথ সুগম হবে। চার বছরের ডিগ্রি কোর্স একেবারেই সমর্থনযোগ্য নয়। বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে ভারতে প্রবেশাধিকার দেওয়া এবং ৪০ শতাংশ শিক্ষাদান অনলাইনে করার মতো যে বিষয়গুলি জাতীয় শিক্ষানীতিতে রয়েছে, তা আদতে দেশের শিক্ষার সর্বনাশ ডেকে আনবে।” অসম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য তপোধীর ভট্টাচার্য বলেন, “এক কথায় এই শিক্ষানীতি একটি জাতিকে ধ্বংসের নীল নকশা ছাড়া আর কিছুই নয়। এই নীতি কার্যকর হলে জনসাধারণের মধ্যে মূল্যবোধ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে তা বাধা হিসেবে কাজ করবে।”