সারের কোথাও অভাব নেই— কেন্দ্রীয় সরকার এমনটা দাবি করলেও কৃষকেরা সারের জন্য হাহাকার করছেন। শুধু তাই নয়। সার কিনতে গিয়ে উত্তরপ্রদেশের ললিতপুরের কৃষক মহেশ বুনকর টানা তিন দিন সকাল থেকে রাত লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তিন দিন অপেক্ষার পরে গত ২৫ অক্টোবর ভরদুপুরে রোদের মধ্যে দোকানের সামনেই অজ্ঞান হয়ে পড়লে জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। পরের দিনই ৩৬ বছরের মহেশ মারা যান। মহেশের মৃত্যুর চার দিন আগে ললিতপুরেই আর এক জন, ভোগিলাল টানা দু’দিন সারের দোকানে অপেক্ষা করার পরে একই ভাবে প্রাণ হারিয়েছিলেন। কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ললিতপুরে গিয়ে ওই মৃত কৃষকদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেছেন। তাঁর অভিযোগ, উত্তরপ্রদেশের ললিতপুর জেলার পাশাপাশি গোটা বুন্দেলখণ্ডেই সারের সঙ্কট চলছে। কৃষকেরা কৃষি আইনের বিরুদ্ধে রাস্তায় নামলে তাঁদের গাড়িতে পিষে দেওয়া হচ্ছে। এখন সারের দাম বাড়ানোর পরেও কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকার কৃষকদের সার জোগাতে ব্যর্থ।
শুধু উত্তরপ্রদেশ নয়। হরিয়ানা, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশের মতো রাজ্যেও ডিএপি ও এনকেপি সারের অভাবে কৃষকদের হাহাকার চলছে। অকাল বৃষ্টির পরে কৃষকেরা আলু, সর্ষের মতো রবি ফসলের জন্য সার কিনতে গিয়ে দেখছেন, সার নেই। সময় মতো সার না পেলে ঠিক মতো ফলন হবে না, এই দুশ্চিন্তায় তাঁরা দিনের পর দিন সারের দোকানের সামনেই লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকছেন। হরিয়ানার মহেন্দ্রগড়ে সারের বস্তা লুট হয়েছে। শুক্রবার মধ্যপ্রদেশের অশোকনগর দেলায় ধনপাল যাদব নামে এক কৃষক সার জোগাড় করতে না পেরে আত্মহত্যা করেছেন বলে তাঁর পরিবারের দাবি। বিরোধীরা এর জন্য কেন্দ্রের মোদী সরকার, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, হরিয়ানায় ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকারের অব্যবস্থাকেই দায়ী করছেন। প্রিয়াঙ্কা বলেন, ‘কৃষকরা ঋণ নিয়ে বসে রয়েছেন। সরকারের নীতির ফলে আরও ঋণে ডুবে যাচ্ছেন। সার না পাওয়া, ফসল নষ্ট হওয়ার ফলে কৃষকদের সমস্যা বেড়েই চলেছে।’