কোভিডের প্রথম ঢেউয়ের সময় রাজ্যজুড়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে নানান উপায় অবলম্বন করেছিল উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পুলিশ। এবার তৃতীয় ঢেউয়ের প্রাক্কালে মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত করার পাশাপাশি মানুষকে সচেতন করতে নিজেদের লেখা গান গাইলেন পুলিশকর্মীরা। বৃহস্পতিবার বিকেলে দেগঙ্গার বেড়াচাঁপা মোড়ে পুলিশের এই কাজে স্থানীয় বাসিন্দারা। অন্যদিকে, বারাসতের চাঁপাডালি মোড়ে পুলিশ কর্মীরা মাস্ক বিলি করার পাশাপাশি মানুষকে সচেতন করেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র অনুযায়ী, দুর্গাপুজোর সময় থেকে জেলার মানুষ আরও লাগামছাড়া হয়ে উঠেছে। বাজারহাটে মাস্কহীন মানুষের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। শুধু বাজার নয়, বাসে-ট্রেনে, সামাজিক অনুষ্ঠান-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে করোনা নিয়ে মানুষের সচেতনতার অভাব দেখা যাচ্ছে প্রতি মুহূর্তে। এই পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকার সকলের মুখে মাস্ক নিশ্চিত করতে চাইছে। বৃহস্পতিবার দেগঙ্গা থানার পুলিশ বেড়াচাঁপা বাজারে করোনা সচেতনতায় পথে নামেন। সেখানে গান গাইলেন দেগঙ্গা থানার আইসি অজয়কুমার সিংহ। “শোনো, কোনও গল্প বলছি না। মরণের কাছে জীবনকে হারতে দিও না। রাস্তায় বের হলে পুলিসটা বলছে, হয়তো ভীষণ বাজে লাগছে। আসলে সে জীবন দিয়ে তোমাকেই বাঁচাতে চাইছে।” অজয়বাবুর নিজের লেখা এই গান শুনে প্রশংসা করেন পথচলতি সাধারণ মানুষ। এদিনের সচেতনতামূলক প্রচারে দেগঙ্গার এসডিপিও সৌম্যজিৎ বড়ুয়া সহ দেগঙ্গা থানার অন্যান্য পুলিশ আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন। অন্যদিকে, এদিন বারাসত থানার পুলিশ বারাসতের চাঁপাডালি মোড়ে সচেতনতার প্রচার ও মাস্ক বিলি করে।
উল্লেখ্য, দুর্গাপুজোর পর থেকে উত্তর চব্বিশ পরগনায় সংক্রমণের গ্রাফ ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। জেলা স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত চব্বিশ ঘণ্টায় জেলায় নতুন করে সংক্রামিত হয়েছেন ১৩৭ জন। মৃত্যু হয়েছে তিনজনের। তারমধ্যে বিধাননগরে আক্রান্তের সংখ্যা ২৮। বারাকপুর মহকুমায় আক্রান্তের সংখ্যা ৭৬। এখানে মৃত্যু হয়েছে ২ জনের। বারাসতে ১৯ জন আক্রান্ত ও ১ জনের মৃত্যু হয়েছে। বনগাঁয় আক্রান্ত হয়েছেন ১৪ জন। এই পরিস্থিতিতে সচেতনতা শিকেয় তুলে দেগঙ্গা সহ অন্যান্য বাজারগুলিতে দেদার ভিড় করে কেনাকাটার ছবি দেখা যাচ্ছে প্রতি মুহূর্তে। অধিকাংশের মুখেই মাস্ক নেই। এই বিষয়ে কোভিড প্রটোকল মনিটরিং কমিটির জেলা কো-অর্ডিনেটর বিবর্তন সাহা বলেন, “কোভিড রুখতে মাস্ক ব্যবহার ও দূরত্ববিধি বজায় রাখার বিকল্প কিছু নেই। সরকারের পক্ষ থেকে বারবার প্রচার সত্ত্বেও অনেকেই উদাসীন। সাধারণ মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধি করতে পুলিশের এই পদক্ষেপ প্রশংসার যোগ্য।”