ফের সমস্যায় পড়ল মোদী সরকার।
সুপ্রিম কোর্টের পর এবার বন্ধুরাষ্ট্র ইজরায়েল। বুধবার দেশের শীর্ষ আদালত কেন্দ্রকে কড়া বার্তা দিয়ে বলেছিল, জাতীয় নিরাপত্তার অজুহাত দেখিয়ে দায় এড়ানো চলতে পারে না। পেগাসাস স্পাই ওয়্যার নিয়ে সত্যিই কী হয়েছে সেটা জানা দরকার। কেন্দ্রের আপত্তি সত্ত্বেও সুপ্রিম কোর্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। আর শীর্ষ আদালতের ওই নির্দেশই ধাক্কা দিয়েছে কেন্দ্রকে। এই ঘটনার ২৪ ঘন্টার মধ্যেই সেই পেগাসাস নিয়ে ইজরায়েলের রাষ্ট্রদূত এমন মন্তব্য করলেন, যা মোদী সরকারের কাছে পুরোপুরি অপ্রত্যাশিত।
প্রসঙ্গত, বিরোধীরা বারবার যে কথা বলে এসেছে পেগাসাস বিতর্ক নিয়ে, সেই একই বক্তব্যের আঁচ পাওয়া গেল ভারতে নিযুক্ত ইজরায়েলের রাষ্ট্রদূতের মুখে। নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত নাওর গিলোন বলেছেন, “পেগাসাস স্পাই ওয়্যার যে সংস্থা তৈরি করে সেই ইজরায়েলের এনএসও কোম্পানি একমাত্র বিদেশি রাষ্ট্রের সরকারকেই এই প্রযুক্তি প্রদান করে। এই প্রযুক্তি বেসরকারি সংস্থাকে বিক্রি করা যায় না। কারণ, ইজরায়েলের সরকারের পক্ষ থেকে ওই এনএসও সংস্থকে যে রপ্তানি লাইসেন্স প্রদান করা হয়, সেটার ভিত্তিই হল তাই। শুধুমাত্র কোনও দেশের সরকারকেই দেওয়া যাবে ওই স্পাই সফট ওয়্যার।” পাশাপাশি ইজরায়েলি রাষ্ট্রদূত বলেছেন, “ভারতে পেগাসাস নিয়ে কী ঘটছে কিংবা কী চাপানউতোর চলছে, সেটা নিয়ে আমাদের কোনও মন্তব্য করা উচিত নয়। কারণ, সেটা ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। সেটা নিয়ে অন্য রাষ্ট্র কোনও অবস্থান নিতে পারে না। মন্তব্য করাও উচিত নয়। আমরা শুধু এটাই বলতে পারি যে, পেগাসাস সংস্থা একমাত্র তখনই ওই প্রযুক্তি বিদেশে পাঠানোর অনুমতি পায়, যখন সেই দেশের সরকারের সঙ্গে চুক্তি সম্পন্ন হয়। সেটা না হলে, ইজরায়েল সরকার কোনওভাবেই লাইসেন্স ইস্যু করে না।”
উল্লেখ্য, ইজরায়েলের রাষ্ট্রদূত তাদের দেশেরই সরকারি মুখপাত্র। কূটনীতিতে এটাই অন্যতম রীতি। সুতরাং রাষ্ট্রদূতের কোনও একটি মন্তব্যকে বিবেচনা করা হয় সেই দেশেরই সরকারি অবস্থান হিসেবে। স্বাভাকিভাবেই এই কথা বারংবার বিরোধীরা উত্থাপন করেছে। সরকারকে প্রশ্ন করা হয়েছে, তারা কি পেগাসাস প্রযুক্তিকে ভারতে ব্যবহারের জন্য কোনও সমঝোতা কিংবা চুক্তি করেছে? সরাসরি সেই প্রশ্নের উত্তর সরকারিভাবে দেওয়াই হয়নি। সুপ্রিম কোর্ট গঠিত তদন্ত কমিটিকে ঠিক এই দায়িত্বগুলিই দেওয়া হয়েছে যে, কীভাবে পেগাসাস স্পাই ওয়্যার কাজ করছে এবং অভিযোগগুলি সত্যি কি না সেটা তদন্ত করে রিপোর্ট জমা দিতে। তাতেই আবার ঘনীভূত হয়েছে পেগাসাস রহস্য।