করোনা অতিমারির জেরে বিগত ২ বছরে দেশের হোসিয়ারি নিটওয়ার ও গারমেন্ট কারখানাগুলির ১৮ থেকে ২০ শতাংশ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এরই মধ্যে আগামী বছরের শুরু থেকে জিএসটির বেসিক রেট ৫ শতাংশ বাড়াতে চাইছে কেন্দ্রীয় সরকার। এই পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করল দেশের হোসিয়ারি, নিটওয়ার, টেক্সটাইল ট্রেডার ও গারমেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স সংস্থাগুলি। বৃহস্পতিবার প্রেস বিবৃতি দিয়ে তারা জানায়, জিএসটি বাড়ানো হলে ক্রেতা তো ক্ষতিগ্রস্ত হবেনই, সেই সঙ্গে উৎপাদন শৃঙ্খলের ওপরেও বিরূপ প্রভাব পড়বে।
প্রেস বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দেশীয় হোসিয়ারি, নিটওয়ার ফেব্রিক, টেক্সটাইল ট্রেডার্স এবং গারমেন্ট শিল্প এখনও কোভিড-পূর্ব স্তরে ফিরে আসেনি। রিটেলার্স অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়ার সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, বর্তমানে জামাকাপড় বিক্রি হচ্ছে কোভিড-পূর্ব স্তরের তুলনায় ৬০ থেকে ৬৫ শতাংশ। জামাকাপড় তৈরির শিল্প প্রধানত খুচরো বিক্রির ওপরে নির্ভরশীল। কোভিড পরিস্থিতিতে জামাকাপড়ের দোকানই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল সকলের আগে। ওই দোকানগুলি খুলেছে সকলের শেষে।
প্রসঙ্গত, দেশীয় হোসিয়ারি ও গারমেন্ট ইন্ডাস্ট্রির বিকাশের পথে সবচেয়ে বাধা হল দীর্ঘমেয়াদি ঋণ। তাছাড়া ওই শিল্পে বিপুল পরিমাণ ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল প্রয়োজন হয়। অতিমহামারীর জন্য অনেকে ঋণ শোধ করতে দেরি করছেন। ম্যানুফ্যাকচারাররাও ব্যবসার পুনরুজ্জীবনের জন্য অনেককে ঋণ দিচ্ছেন বাধ্য হয়েই। এর ওপরে যদি জিএসটির হার পাঁচ শতাংশ বাড়ানো হয়, তাহলে ছোট ও মাঝারি শিল্পগুলিই বিপদে পড়বে সবচেয়ে বেশি।
সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ২০২০ ও ‘২১ সালে কোভিড অতিমহামারীর সময় দেশের হোসিয়ারি নিটওয়ার ও গারমেন্ট কারখানাগুলির ১৮ থেকে ২০ শতাংশ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। কৃষি বাদে গারমেন্ট ইন্ডাস্ট্রিতেই দেশের সবচেয়ে বেশি সংখ্যক কর্মী নিয়োগ হয়। সেখানে ইতিমধ্যে নিয়োগ কমেছে ২০ শতাংশ। এর ওপরে যদি ওই শিল্পের ওপরে আরও চাপ পড়ে, তাহলে তার মুনাফার ওপরে নিশ্চিতভাবেই প্রভাব পড়বে।
হোসিয়ারি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়ার সভাপতি এবং রূপা অ্যান্ড কোম্পানির ম্যানেজিং ডিরেক্টর কে বি আগরওয়াল বলেন, ভারতে হোসিয়ারি ও নিটওয়ার তথা গারমেন্ট ইন্ডাস্ট্রিতে ১ কোটি ১০ লক্ষ লোক কাজ করেন। প্রায় একই সংখ্যক মানুষ এমব্রয়ডারি ইউনিট, ওয়াশিং লন্ড্রিজ, প্যাকেজিং ইন্ডাস্ট্রি ইত্যাদিতে যুক্ত। এই শিল্পে কাজের সুযোগ যদি ১৮ শতাংশ কমে যায়, তাহলে ১৪ লক্ষ ৪০ হাজার মানুষ কাজ হারাবেন। করের হার যদি সাত শতাংশ বাড়ানো হয়, তাহলে চাকরি আরও কমবে। সম্ভবত ২০ লক্ষ মানুষ কাজ হারাবেন।