উনিশের লোকসভা ভোটের কিছু দিন পরই অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছিল পুরুলিয়ার বিজেপি কর্মী ত্রিলোচন মাহাতোর। রাজ্য বিজেপি নেতারা তখন ছুটে গিয়েছিলেন ত্রিলোচনের বলরামপুরের বাড়িতে। এমনকী, অমিত শাহ পুরুলিয়ায় সভা করতে এসে মঞ্চে ডেকে নিয়েছিলেন ত্রিলোচনের পরিবারের সদস্যদের। সে সময়ই তাঁর পরিবারের তরফে কেন্দ্রীয় সরকারি চাকরির আর্জি জানানো হয়েছিল বিজেপি নেতাদের কাছে। তারপর দেখতে দেখতে কেটে গিয়েছে তিন বছর। কিন্তু তাঁদের কারও চাকরি জোটেনি।
ত্রিলোচনের দাদা বিবেক মাহাতোর কথায়, ‘পরিবারের কারও চাকরি হলে খুব ভাল হতো। দলের নেতাদের কাছে বারবার আর্জি জানিয়েছি। আমাদের এলাকার সাংসদ বিজেপির। বিধায়কও। তাঁদের কাছেও আর্জি জানিয়েছি। কিন্তু চাকরি জুটছে না আমাদের।’
বিজেপির দাবি, গত পঞ্চায়েত ভোটের পর থেকে এখন পর্যন্ত রাজনৈতিক হিংসায় দলের ২৫০-এর বেশি কর্মীর প্রাণ গিয়েছে। এঁদের পরিবার থেকে একজন করে সদস্যকে কেন্দ্রীয় সরকারের চাকরি জুটিয়ে দেওয়ার অনুরোধ বারবার দিল্লীতে করেছেন দিলীপ ঘোষরা। রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের যুক্তি ছিল, কেন্দ্রীয় সরকার ‘শহীদ পরিবার’-এর পাশে দাঁড়ালে দলের নিচুতলার কর্মীরাও যেমন চাঙ্গা হতেন, তেমন রাজ্য সরকারের ওপরেও চাপ তৈরি হতো।
সূত্রের খবর, অমিত শাহ, জেপি নাড্ডা-সহ একাধিক শীর্ষ কেন্দ্রীয় নেতার কাছে এই বিষয়ে দরবার করে চলেছেন রাজ্য বিজেপির পদাধিকারীরা। কিন্তু তাঁদের দাবিকে পাত্তাই দেয়নি দিল্লী। বরং, বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের পাল্টা যুক্তি, বাংলায় নিহত দলীয় কর্মীদের পরিবারের কাউকে কেন্দ্রীয় সরকারি চাকরির ব্যবস্থা করে দিলে অন্যান্য রাজ্যেও একই দাবি উঠবে। প্রশ্ন উঠবে, শুধু বিজেপি কর্মীদের পরিবারের সদস্যদের সরকারি চাকরি দেওয়া হচ্ছে কেন? রাজ্য বিজেপি নেতারা অবশ্য এই সব যুক্তি মানতে নারাজ। তাঁদের বক্তব্য, ‘কেন্দ্রীয় নেতারা যে বলেন, বাংলার মতো রাজনৈতিক সন্ত্রাস দেশের আর কোনও রাজ্যে হয় না। তা হলে এখন অন্যান্য রাজ্যগুলিকে শিখণ্ডী খাড়া করা হচ্ছে কেন!’