সোমবারই স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নিয়ে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপর মঙ্গলবারই নতুন অ্যাডভাইসরি জারি করেছে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর। আর সেই নয়া নির্দেশিকার দ্বারা রোগ নির্ণয় খাতে খরচের লক্ষণরেখা বেঁধে দিয়েছে রাজ্য সরকার। স্বাস্থ্য দফতরের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, এবার থেকে রোগী ভর্তির পর ক্লিনিক্যাল পরীক্ষা বাবদ বেসরকারি হাসপাতাল বা নার্সিংহোম পাঁচ হাজার টাকার বেশি খরচ করতে পারবে না। এবং এরপরেই রোগীকে প্যাকেজের আওতায় আনতে হবে।
এই নির্দেশিকায় স্পষ্ট বলা হয়েছে, রোগী ভর্তির পর একের পর এক ক্লিনিক্যাল পরীক্ষা করা চলবে না। সর্বাধিক পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত টেস্ট করা যাবে। আর ওই সময় পর্যন্ত বেড চার্জ অনুমোদন করবে সরকার। এর অন্যথা হলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে রাজ্য সরকার। বিশেষজ্ঞদের মতে, বেসরকারি রাসপাতালগুলি যাতে দ্রুত রোগ নির্ণয় করে চিকিৎসা শুরু করতে পারে তার জন্যই এই ব্যবস্থা।
তবে রোগীদের পরিবারের অভিযোগ ছিল, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বেসরকারি হাসপাতালগুলি রোগীর রোগ নির্ণয়ের জন্য প্রচুর শারীরিক পরীক্ষা করিয়ে নেয়। সরকারি হাসপাতালগুলিতেও অনেক ক্ষেত্রে এটা দেখা যায়। কারণ সরকারি হাসপাতাগুলিতে পিপিপি মডেলে ডায়গনস্টিস সেন্টারগুলিতে অযথা রেফার করে দেওয়ার প্রবনতা লক্ষ্য করেছেন স্বাস্থ্য কর্তারা। এরপরই কড়া অবস্থান নিল রাজ্য সরকার।
বর্তমানে স্বাস্থ্যসাথীর আওতায় মোট ১৯০০টি বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা-প্যাকেজ চালু রয়েছে। নতুন অ্যাডভাইসরিতে স্পষ্ট বলা হয়েছে, বেশ কিছু বেসরকারি হাসপাতাল-নার্সিংহোম রোগী ভর্তি নেওয়ার পর অনর্থক একের পর এক ক্লিনিক্যাল পরীক্ষা করিয়ে নেয়। তার পরে যখন রোগ নির্ণয় হয়, তত ক্ষণে বাড়তি খরচের বোঝা চেপে যায়। সেই বাড়তি বোঝা বইতে গিয়ে রাজ্য সরকারের দৈনিক গড়ে প্রায় ৮ কোটি টাকা (মাসে আড়াইশো কোটির কাছাকাছি) খরচ হচ্ছে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে। এই খরচে লাগাম টানতেই কড়া ব্যবস্থা নিল মমতা সরকার।