কলকাতা তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে নানা সময় নানা মন্তব্য করেন নেটিজেনরা। কিন্তু তাঁর ‘কুছ পরোয়া নেহি’। নিজের বিধানসভা এলাকা, প্রান্তিক মানুষের কথা আর দলিত সাহিত্য অ্যাকাডেমি নিয়েই তিনি ব্যস্ত থাকেন। বলাগড়ের বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারীর বাহন নিয়ে এবার শুরু হয়েছে চর্চা। আর তিনি তার জবাব দিয়েছেন সোশ্যাল মিডিয়াতেই।
বলাগড়ের বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারী লিখেছেন, ‘সেই গাড়ি দেখে অনেকের বুক ফেটে যাচ্ছে। তাদের বলছি আপনারা একটু গুগল ঘেঁটে জেনে নিন না, ওটার মালিক কে? আমি চাপলেই সেটা আমার হয়ে যায় না। আমি তো মাঝে মাঝে প্লেনেও চাপি, ট্রেনেও চাপি তার মানে কি ওগুলোর মালিক আমি?’
তৃণমূল বিধায়কের যুক্তি, ‘ওই গাড়িখানা পাঁচ বছরের জন্য আমি ভাড়া নিয়েছি। আর একটা কথাও আপনাদের জানিয়ে রাখি, আমি আগে একটা সরকারি চাকরি করতাম। যে কোনও সরকারি চাকুরে চাকরি ছাড়ার পর পিএফ, গ্র্যাচুইটি থেকে যে টাকা পায় ওরকম গাড়ি গোটা দুয়েক কিনতে পারে। আমার ছেলেও সরকারি চাকরি করে। সেও কিনতে পারে এমন একটা গাড়ি। আর একটা কথা, আমি অ্যামাজনের লেখক। প্রথম দিন চুক্তির সময় তারা যে টাকা দিয়েছিল সেই টাকায় কলকাতায় আমার দোতলা বাড়িটা হয়েও বেশ কিছু টাকা হাতে ছিল। যা দিয়ে ছেলের বিয়ে, বউমার একটা গলার হার হয়ে গিয়েছে। কাজেই আমি ফতুয়া-পাজামা পরে ঘুরে বেড়াই এর মানে এই নয় যে আমি পথের ভিখারী। আমি দামি জামাকাপড় পরি না। বিলাসিতা করি না। এই কারণে, আমি সেই না খাওয়া দিন, সেই দরিদ্র জীবন ভুলতে চাই না।’
একটা সময় রিকশা চালাতেন। বলাগড় বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী হওয়ার পর তিনি মনোনয়নপত্র জমা গিয়েছিলেন সেই রিকশা চড়েই। বলাগড় কেন্দ্রে বিপুল ব্যবধানে জয়ের পর একটি টোটোও কিনেছিলেন। সেই বাহনে চড়েই নিজের নির্বাচনী কেন্দ্রের প্রতি প্রান্তে পৌঁছে যাওয়ার আশ্বাসও দিয়েছিলেন তিনি। সেই বিধায়কবাবুকে এবার দেখা গিয়েছিল গাড়িতে। আর তা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন নেটিজেনরা। আর তার জবাবও দিয়েছেন বলাগড়ের বিধায়ক।
গাড়িতে চড়ার কথা অস্বীকার করেননি মনোরঞ্জন। সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি লিখেছেন, ‘প্রিয় বন্ধু, নীচে যে বাহনের ছবি ওটাই আমার। আমি আমার মেহনতের পয়সায় এটা কিনেছি। এটা চড়ে আমি বলাগড়ের অলিগলিতে ঘুরে বেড়াতে পারি। মেন রোডে উঠতে পারি না। আর খুব বেশি দূরে যাওয়া চলে না। তখন চার্জ শেষ হয়ে গেলে খুব সমস্যায় পড়তে হয়। যেমন মাঝে মাঝে পড়ি। তাই কলকাতায় যেতে হলে, বিভিন্ন সময়ে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে যেতে হলে আমাকে একটা গাড়ি ভাড়া করতে হয়। আপনাদের জ্ঞাতার্থে জানাই আমি দলিত সাহিত্য আকাদেমির চেয়ারম্যান কি না, তাই গোটা পশ্চিমবঙ্গ আমার কর্মক্ষেত্র।’