টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে টিম ইন্ডিয়াকে ফের নতুন ভাবে যাত্রা শুরু করার পরামর্শ দিলেন প্রাক্তন ভারতীয় অধিনায়ক দিলীপ বেঙ্গসরকর। প্রাক্তন পেসার মদন লাল আবার মনে করেন, খোঁচা খাওয়া ভারত আরও ভয়ঙ্কর। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ৩৬ রানে অলআউট হওয়ার পরেও তৃতীয় সারির দল নিয়ে টেস্ট সিরিজ জিতেছিল ভারত। সেই দলের তুলনায় বিশ্বকাপের দল অনেক বেশি শক্তিশালী। হারের ধাক্কা কাটিয়ে ভারতের ঘুরে না দাঁড়ানোর কোনও কারণই দেখছেন না মদন লাল।
বেঙ্গসরকরের মতে, শাহিন শাহ আফ্রিদির প্রথম স্পেলই বড় ধাক্কা দিয়েছে ভারতীয় শিবিরকে। ২০১৯ বিশ্বকাপে কয়েকটি ম্যাচ খেলেছিলেন শাহিন। তখনও তাঁর হাতে এই বিষাক্ত সুইং দেখা যেত না। গতি বরাবরই তাঁর অস্ত্র। কিন্তু ডান-হাতি ব্যাটারের ভিতরের দিকে আসা সুইং তিনি রপ্ত করেছেন সম্প্রতি। প্রাক্তন অধিনায়ক জানিয়েছেন, ভারতীয় ব্যাটাররা এ বিষয়ে হয়তো ওয়াকিবহাল ছিলেন না। বেঙ্গসরকর বলেন, “প্রথম তিন ওভারের মধ্যেই দু’টি বিস্ময় ডেলিভারিতে যদি কোনও দলের ওপেনারেরা ফিরে যায়, তা-ও আবার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে, সেই জায়গা থেকে ম্যাচে ফেরা খুবই কঠিন। তবুও বিরাট অসাধারণ লড়াই করে ভারতের সামনে জেতার সুযোগ করে দিয়েছিল। কিন্তু আমাদের বোলাররা ঠিক জায়গায় বল রাখতে পারেনি।”
পাশাপাশি, দশ উইকেটে ভারতের এই হারে বেঙ্গসরকর হতাশ হলেও তিনি মনে করেন না বিষয়টি লজ্জাজনক। তাঁর কথায়, “প্রতিযোগিতার শুরুতেই বুঝে গিয়েছি কোথায় আমাদের ফাঁক রয়েছে। এ ধরনের হারের ফল দু’রকম হয়। কোনও দল একেবারেই ভেঙে পড়ে। আবার কোনও শিবির দ্বিগুণ শক্তিশালী হয়ে কাপ নিয়ে যায়। এই ভারতীয় দলের মধ্যে ফিরে আসার প্রবণতা আছে।” উদাহরণ টেনে তিনি যোগ করেন, “অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ৩৬ রানে অলআউট হওয়ার পরে সবাই ভেবেছিল ০-৪ সিরিজ হারবে। কিন্তু অঙ্ক তো মেলেনি। প্রত্যেককে ভুল প্রমাণিত করে শ্রেষ্ঠ ক্রিকেট উপহার দিয়েছিল তারা।”
এই জায়গা থেকে কী করে বিরাটরা ফিরে আসতে পারেন, সেই পরামর্শও দিয়েছেন বেঙ্গসরকর। তাঁর মতে, “ভারতীয় ওপেনারেরা রানে ফিরলেই দল চাঙ্গা হয়ে যাবে। পরের ম্যাচ নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে। সে দলেও বাঁ-হাতি পেসার আছে। শাহিনের মতোই ডান-হাতি ব্যাটারের ভিতরের দিকে সুইং করায় ট্রেন্ট বোল্ট। রোহিত ও রাহুল নিশ্চয়ই শাহিনের বিরুদ্ধে নিজেদের আউটের ভিডিও দেখবে। বুঝতে পারবে, বাঁ-হাতি পেসারকে সামলাতে গেলে কিছুটা হলেও স্টান্স বদলাতে হবে। বোলারের দিকে কাঁধ ঘোরানো থাকলেই শরীর কিছুটা খুলবে। ভিতরের দিকে আসা বল অনায়াসেই সামলে দেওয়া যাবে। শাহিনের বিরুদ্ধে ব্যর্থতা থেকেই বোল্টকে সামলানোর পরিকল্পনা তৈরি করুক রোহিতরা।”
শাহিনের সুইংয়ে মুগ্ধ হয়েছেন মদন লাল। প্রাক্তন পেসার হিসেবে কোনও তরুণকে সুইং পেতে দেখলে এখনও তাঁর মুখে হাসি ফুটে ওঠে। মদনের প্রতিক্রিয়া, “অসাধারণ পেসার তুলে এনেছে পাকিস্তান। একজন বাঁ-হাতি পেসার এ ভাবেই ম্যাচে পার্থক্য গড়ে দেয়।” যোগ করেন, “তবে খোঁচা খাওয়া ভারত আরও ভয়ঙ্কর। বিরাট ও রবি শাস্ত্রী আগেও প্রমাণ করেছে, অসম্ভব বলে কিছু হয় না। আমার বিশ্বাস আগামী ম্যাচে ফিরে আসবে ভারত।” মদন মনে করেন দলে একজন অভিজ্ঞ স্পিনার প্রয়োজন। সি ভি বরুণ বিস্ময়-স্পিনার হলেও বড় মঞ্চের চাপ সামলানোর মতো পরিণত হয়ে উঠতে পারেননি। তাঁর কথায়, “অশ্বিনকে খেলাতে পারে প্রথম দলে। নতুন বলেও ও সফল। অশ্বিনের হাতে প্রচুর বৈচিত্র্য। নিউজিল্যান্ডের ব্যাটাররা স্পিনের বিরুদ্ধে স্বচ্ছন্দ নয়। অশ্বিন আগামী ম্যাচে পার্থক্য গড়ে দিতেই পারে।” মহম্মদ শামিকে গণমাধ্যমে বিদ্রুপ করার প্রতিবাদেও সরব প্রাক্তনরা। বেঙ্গসরকর বলেই দিলেন, “গণমাধ্যমে যা হচ্ছে, তা মানা যায় না।” মদনের বলতে দ্বিধা নেই, “দু’দেশের সম্প্রীতির ছবি দেখার পরেও এই সব মাথায় আসে কী করে? শামি ভারতের সম্পদ। ওর মতো পেসার বিশ্বের কোনও দেশে নেই।”