সদ্যই প্রকৃতির রোষের মুখে পড়ে বিপর্যস্ত হয়েছে উত্তরাখণ্ডের পাহাড়ি এলাকা। ভূমিধস, তুষারঝড়ের কবল থেকে বাদ যায়নি বঙ্গের পার্বত্য অঞ্চল – দার্জিলিং, কালিম্পংও। সেখানে বেড়াতে গিয়েও আটকে পড়েছিলেন বহু পর্যটক। কোনওক্রমে প্রাণ নিয়ে ঘরে ফিরতে পেরেছেন তাঁরা। কিন্তু সুদূর উত্তরাখণ্ড থেকে প্রাণে বেঁচে ফিরতে পারেননি অনেক বাঙালি অভিযাত্রীই। দুর্গমের টানে ট্রেকিংয়ে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন বাংলার ৫ জন। সোমবার তাঁদের দেহ ফিরেছে রাজ্যে। এই বিপর্যয় মোকাবিলায় রাজ্য সরকারের কী ভূমিকা নিচ্ছে, তা নিয়ে কোনও ইঙ্গিত মিলছিল না এতদিন। সোমবার শিলিগুড়িতে প্রশাসনিক বৈঠকে যোগ দিয়ে এবার মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী। জানালেন, ‘উত্তরাখণ্ডে অনেকে মারা গিয়েছে। আমরা খুবই দুঃখিত। সমবেদনা জানাচ্ছি’।
রবিবার থেকে ৫ দিনের উত্তরবঙ্গ সফরে রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সোমবার উত্তরকন্যায় প্রশাসনিক বৈঠকে হাজির হয়েছেন। এবার খানিকটা অসুস্থ শরীর নিয়েই উত্তরবঙ্গে গিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার সেকথা জানিয়েছেন তিনি নিজেই। সোমবার সেই অবস্থাতেই প্রশাসনিক বৈঠকে যোগ দিলেন তিনি। সকলকে উৎসবের শুভেচ্ছা জানিয়ে বেদনা ব্যক্ত করলেন মুখ্যমন্ত্রী। বললেন, ‘বাইরে উত্তরাখণ্ডে অনেকে মারা গিয়েছে। আজ ৫ জনের দেহ এসেছে রাজ্যে। আরও আসবে। আমরা এই অবস্থায় খুবই দুঃখিত। পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি’।
তৃতীয়বার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর প্রথমবার উত্তরবঙ্গ সফরে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী। শিলিগুড়ির উত্তরকন্যায় জেলা প্রশাসনের বৈঠক করছেন। কোভিড আবহে যেসব কাজ অসমাপ্ত ছিল, সেসব ফেলে রাখা কাজ সম্পূর্ণ করতে উদ্য়োগী হন। তবে এদিনের বৈঠকে শিল্পমহলের কোনও প্রতিনিধি না থাকায় কিছুটা ক্ষোভপ্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, ‘ডিএম, এসপি-রা সব মিটিংয়েই থাকবে। একটা মিটিং বলা মানে সবাইকে থাকতে বলা। এমনিতেই কোভিডের কারণে কাজ অনেকটা পিছিয়ে গিয়েছে’। কোভিডের পাশাপাশি ম্যালেরিয়া নিয়ে সতর্ক করেন তিনি। প্রশাসনিক কর্তাদের উদ্দেশে বলেন, ‘এলাকা পরিচ্ছন্ন থাকছে কি না, সে বিষয়ে নজরদারি বাড়াতে হবে। এসব এলাকায় ম্যালেরিয়া ছড়ানোর প্রবণতা বেশি। সাবধানে থাকতে হবে’। এই বৈঠক সেরে মুখ্যমন্ত্রী উত্তরবঙ্গের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলি পরিদর্শনে যেতে পারেন। মঙ্গলবার তিনি কালিম্পংয়ে যাবেন।