এতদিন ভারতীয় সীমানার ভিতর ১৫ কিলোমিটার পর্যন্ত এলাকা বিএসএফ-এর নজরদারির আওতায় ছিল। দু’সপ্তাহ আগে একটি নোটিস জারি করে পাকিস্তান ও বাংলাদেশ লাগোয়া পাঞ্জাব, অসম এবং বাংলায় সেটা বাড়িয়ে ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। এবার তাতেই আপত্তি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
চিঠিতে কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তকে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় আঘাত বলে উল্লেখ করেছেন মমতা। একই সঙ্গে অবিলম্বে এই বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহারের আবেদনও জানিয়েছেন তিনি। চিঠিতে মমতা লিখেছেন, ‘নেপাল, ভুটান ও বাংলাদেশ মিলিয়ে বাংলার মোট ২১৬৪.৭১ কিলোমিটার আন্তর্জাতিক সীমানা রয়েছে। বাংলার আয়তন ৮৮,৭৫২ বর্গ কিলোমিটার। কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত মানতে হলে ধরে নিতে হবে, সেই আয়তনের মধ্যে প্রায় ৩২,৪০০ বর্গ কিলোমিটার অর্থাৎ রাজ্যের ৩৭ শতাংশ এলাকাই বিএসএফের নিয়ন্ত্রণে চলে যাবে’।
এটাকে রাজ্যের এক্সিকিউটিভ ক্ষমতা এবং রাজ্য পুলিশের এক্তিয়ারে হস্তক্ষেপ বলে উল্লেখ করেছেন মমতা। তিনি স্পষ্ট জানিয়েছেন, ‘সংবিধান অনুযায়ী নিজের রাজ্যে কোনও অপরাধের তদন্ত করার অধিকার রয়েছে রাজ্য পুলিশের। সুপ্রিম কোর্টও স্পষ্ট করে দিয়েছে, কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করে রাজ্যের নাগরিক ও পুলিশি ক্ষমতা খর্ব করা যায় না। কিন্তু কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিএসএফের ক্ষমতা বেড়ে গেলে ১১ টি জেলা এবং রাজ্যের ৩৭ শতাংশ এলাকায় রাজ্য পুলিশের ক্ষমতা খর্ব হবে’।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের সঙ্গে উত্তরবঙ্গের ৬ টি জেলার সীমান্ত রয়েছে। মুর্শিদাবাদ, মালদা, দক্ষিণ দিনাজপুর, উত্তর দিনাজপুর, কোচবিহার ও শিলিগুড়ি। কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে ৫২ টি থানার আওতাধীন এলাকা বিএসএফের নিয়ন্ত্রণে চলে যাবে। পাঞ্জাবের পরিস্থিতিও অনেকটা একইরকম। এই নির্দেশিকা জারির পরই কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী চরণজিৎ সিং চন্নি। এবার প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।