চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে জাতীয় স্তরে বিজেপি বিরোধী জোটে থাকা একপ্রকার নিশ্চিত হয়ে গেলেও রাজ্যের ক্ষেত্রে তৃণমূল সম্পর্কে অবস্থান কী হবে, তা ঠিক করতে গিয়ে এবার মতানৈক্য ঘটতে পারে সিপিএমে। আজ, শুক্রবার থেকে দিল্লীতে তিনদিনের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকের আলোচনায় তৃণমূল নিয়ে অবস্থান স্থির করতে একাধিক মতামত ঘুরেফিরে আসবে বলে মনে করা হচ্ছে। বৈঠকে আগামী লোকসভা নির্বাচনে পার্টির রাজনৈতিক রণকৌশলের লাইন নিয়েও আলোচনা হবে বলে জানা গিয়েছে।
আগামী বছর এপ্রিলের তৃতীয় সপ্তাহে কেরালার কান্নুরে হবে সিপিএমের পার্টি কংগ্রেস। তার আগে জানুয়ারিতে শেষ কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক। আর এবার, শুক্রবার থেকে তিনদিনের বৈঠকে পার্টির রাজনৈতিক ও সাংগাঠনিক খসড়া প্রস্তাবের বিষয় নিয়ে আলোচনায় বসছে কেন্দ্রীয় কমিটি। সেক্ষেত্রে দেশজুড়ে বিজেপি বিরোধী যে জোট গঠন হবে, তার পক্ষে সওয়াল করেই প্রস্তাব রাখা নিশ্চিত। পার্টির শীর্ষ নেতৃত্ব ইতিমধ্যেই তা স্পষ্ট করেছে। তবে জটিলতা রয়েছে রাজ্যভিত্তিক অবস্থান নিয়ে।
যেমন কেরালা ও ত্রিপুরায় কংগ্রেসের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে বিতর্ক দানা বাঁধার সম্ভাবনা প্রবল। তেমনই বাংলায় তৃণমূলকে নিয়ে আলিমুদ্দিনের অবস্থান ঠিক করতে বিতর্ক হবে। কেরালা কংগ্রেস চিরকালই সিপিএমের প্রধান শত্রু। সর্বভারতীয় স্তরে কংগ্রেসের সঙ্গে থাকলে কেরালায় সমস্যায় পড়তে হবে। আবার ত্রিপুরায় বর্তমানে বিজেপি মূল প্রতিদ্বন্দ্বী হলেও কোনওদিনই কংগ্রেসের সঙ্গে সদ্ভাব ছিল না, এখনও নেই। সেখানেও নতুন করে মানুষের কাছে জবাবদিহি করার প্রশ্ন থাকবে।
এদিকে, সর্বভারতীয় স্তরে তৃণমূলের সঙ্গে বিজেপি বিরোধী জোটে থাকলে রাজ্যে বিরোধিতা নিয়ে জনমানসে প্রশ্ন উঠবে। আবার রাজ্যে শাসকদলের সঙ্গে দূরত্ব কমালেও পার্টির অন্দরে মতানৈক্য তৈরি হতে পারে। তাই আগেভাগেই রাজ্যে বিজেপির পাশাপাশি তৃণমূলের বিরোধিতার লাইনে হাঁটার পক্ষে কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে সওয়াল করার সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখেছে বঙ্গ সিপিএম। কিন্তু অন্য রাজ্যের প্রতিনিধিরা যদি তৃণমূলের পাশে থাকার পক্ষে সওয়াল করে, তাহলে বেকায়দায় পড়তে হবে বিমান বসু, সূর্যকান্ত মিশ্রদের।