বংশ পরম্পরায় দিয়ে চলেছেন সম্প্রীতির বার্তা! প্রথা মেনেই লক্ষ্মী পূর্ণিমায় শুরু হল কোচবিহারের মহারাজাদের কুলদেবতা মদনমোহন ঠাকুরের রাসচক্র তৈরির কাজ। চিরাচরিত রেওয়াজ মেনে ওই রাসচক্র তৈরির কাজ শুরু করলেন কোচবিহারের গুড়িয়াহাটি গ্রামের আলতাপ মিঞার পরিবার। শুনতে অবিশ্বাস্য লাগলেও বিগত তিন প্রজন্ম ধরে রাজআমলের এই ঐতিহ্য, সম্প্রীতির বার্তা বয়ে নিয়ে চলেছে কোচবিহারের গুড়িয়াহাটি গ্রামের আলতাপ মিঞার পরিবার।
কোচবিহারের গুড়িয়াহাটি গ্রামের তোর্সা নদীর বাঁধের পাড়ের বাস আলতাপ মিঞার৷ দেবত্র ট্রাস্ট বোর্ডের অধীনে আনন্দময়ী ধর্মশালাতে অস্থায়ী চাকরি করেন তিনি৷ তবে লক্ষ্মীপুজো থেকে রাসপূর্নিমা পর্যন্ত তাঁর চাকরিতে একমাস ছুটি। রাসচক্র তৈরির জন্যই এই এক মাস ছুটি পান তিনি। আলতাপ মিঞা বলেন, ‘এই রাসচক্র বানানো একটা বিরাট অনুভূতি। আমার অবর্তমানে আমার ছেলে বানাবে এই রাসচক্র।’ তাঁরা রাজআমলের এই ধারা এগিয়ে নিয়ে যাবে এবং সম্প্রীতির বার্তা দেবেন বলে দাবি আলতাপ মিঞা ও তাঁর পরিবারের।
১৮৯০ সালে কোচবিহারের মহারাজা নৃপেন্দ্র নারায়ণের আমলে মদনমোহন ঠাকুরের রাসযাত্রা বড় আকারে শুরু হয়। বর্তমানে সেই রাজত্ব, রাস উৎসবের সেই আড়ম্বর না থাকলেও রাজবাড়ির রাস উৎসবের চিরাচরিত রীতিতে কোনও ছেদ পড়েনি। তাই চিরাচরিত প্রথা মেনেই কোজাগরী লক্ষ্মী পূর্ণিমায় শুরু হল রাসচক্র বানানোর কাজ। এই কাজ চলবে রাসপূর্ণিমা পর্যন্ত। চিরাচরিত রীতি মেনেই গুড়িয়াহাটি গ্রামের মুসলিম পরিবার, আলতাপ মিঞার পরিবার রাসচক্র বানানোর কাজ শুরু করল। এই রাসচক্র ঘুরিয়েই সূচনা হয় কোচবিহার রাজবাড়ির কুলদেবতা মদনমোহন ঠাকুরের রাসযাত্রা উৎসবের।