সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির নজির হয়ে রইল বাদুড়িয়া। মুসলিম যুবকদের কাঁধে চড়ে শেষকৃত্য সম্পন্ন হল হিন্দু যুবকের। যখন দুর্গাপুজোকে কেন্দ্র করে প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশে হিংসা, অশান্তি, হানাহানি ও সাম্প্রদায়িক উস্কানির মতো ঘটনা ঘটে চলেছে, তখন এমনই নজিরবিহীন ঘটনার সাক্ষী থাকলেন উত্তর ২৪ পরগনার বাদুড়িয়ার নারকেলবেরিয়া গ্রামের বাসিন্দারা। গত বছর থেকেই করোনা অতিমারীতে আক্রান্ত গোটা বিশ্ব। ভ্যাকসিন আবিষ্কার হোক কিংবা সংক্রমণ কমলেও এখনও করোনার হাত থেকে মুক্তি মেলেনি। এই পরিস্থিতিতে করোনা সংক্রমণের ভয়ে গোটা বিশ্ব তথা দেশ, রাজ্য তটস্থ। সংক্রমণের হাত থেকে বাঁচতে দ্বিধাবিভক্ত হয়ে গিয়েছে সমাজ। তখন ঠিক এইরকমই এক সম্প্রীতির ঘটনার সাক্ষী থাকল বসিরহাটের বাদুড়িয়া থানার নারকেলবেরিয়া গ্রাম।
উল্লেখ্য, ওই গ্রামে দীর্ঘদিন ধরেই বসবাস হিন্দু-মুসলমান উভয় সম্প্রদায়ের মানুষের। সেখানেই বাড়িতে গত ২৪ ঘন্টা পড়েছিল পেশায় দিনমজুর ইমন রায় নামে ২৭ বছরের যুবকের মৃতদেহ। বাবা নেই। দারিদ্রতাকে সঙ্গী করে বৃদ্ধ মাকে নিয়েই থাকতেন তিনি। কিন্তু সম্প্রতি মারা যান ইমন। করোনায় মৃত্যু হয়েছে তাঁর, এই সন্দেহই করতে থাকেন প্রতিবেশীরা। সংক্রমনের ভয়ে তাই তাঁর মৃতদেহের ধারপাশেও যায়নি কেউই। শুধুই একা বৃদ্ধ মা ই মৃতদেহ আঁকড়ে পড়ে ছিল দিনরাত। তার পক্ষে একা ছেলের দেহ সৎকার সম্ভব ছিল না। এই সময়ই দেবদূতের মত পাশে এসে দাঁড়ায় হাফিজুল, আরিফুল, শরিফুল, শাহানুর, ফিরোজ, সাহেব আলি মোল্লারা। ছিল সন্তোষ, তপন, হিমাংশু, ছোটনরাও। ওই বৃদ্ধার অসহয়তার খবর পেয়ে নিজেদের পকেটের টাকা দিয়েই ইমনের মৃতদেহ সৎকারের যাবতীয় বন্দোবস্ত করে হিন্দু-মুসলিম দুই সম্প্রদায়ের যুবকরা। আর এই ঘটনাই ফের একবার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির নজির হয়ে রইল।