অভাবের মধ্য দিয়েই দিপযাপন ওঁদের। কেউ দিনমজুরের কাজ করেন। কেউ বা সেলাই দিদিমণি। কেউ আবার খাবারের তৈরির পর হোম ডেলিভারির ব্যবসা করেন। পাশাপাশি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর কাজের সঙ্গেও যুক্ত তাঁরা। আর তাঁদের স্বামীরা দিনমজুরের কাজ করেন। কারোরই মাথার উপর পাকা ছাদ নেই। পাড়ার সেই সমস্ত মহিলারা একত্রিত হয়ে আয়োজন করলেন কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোর। এবং তা আয়োজিত হল ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে’র টাকায়। ধনসম্পদের দেবীর কাছে ওই মহিলাদের কামনা, “রাজ্যের শ্রীবৃদ্ধি হোক। অটুট থাকুক লক্ষ্মীর ভাণ্ডার।” বাসন্তী মালা, রিনা, সুষমাদের আর্থিক স্বাচ্ছন্দ্য নেই মোটেই। তবে মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্পের টাকায় কিছুটা হলেও মুখে হাসি ফুটেছে ওঁদের ঠোঁটে। এই প্রথমবার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরকারি লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা পেয়েছেন তাঁরা। মা লক্ষ্মী নামাঙ্কিত প্রকল্পের টাকা দিয়ে ছোট করে কোজাগরী লক্ষ্মী পুজোর আয়োজন করেছেন কুলটির মিঠানির মা সারদা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা। গ্রামে দেখা গেল, মাটির বাড়ির দাওয়াতেই বসানো হয়েছে প্রতিমা। দরজায়-দরজায় টাঙানো হচ্ছে আম্রপল্লব।
মোটামুটি শেষ পুজোর আয়োজন। বুধবার হবে পুজো। মহিলাদের উৎসাহ ছিল চোখে পড়ার মতো। ইতিমধ্যে অ্যাকাউন্টে হাজার টাকা করে দু’বার অর্থাৎ মোট দু’হাজার টাকা পেয়েছেন তাঁরা। সুষমা বাউরি, মালা বাউরি, বাসন্তী বাউরিরা বলেন, “ওই টাকা পেয়েই আমরা পুজোর আয়োজন করেছি। আমাদের কামনা, এই লক্ষ্মীর ভাণ্ডার অটুট থাকুক।” বন্দনা বাউরি, রিনা বাউরিরা বলেন, “আমরা চাই রাজ্যের লক্ষ্মী লাভ হোক। তবেই আমাদেরও আর্থিক উন্নতি হবে।” সুষমা বাউরি কথায়, “মা লক্ষ্মীর পুজো করেই লক্ষ্মী ভান্ডারের শ্রীবৃদ্ধি কামনা করেছি আমরা।” তৃণমূলের এসসিএসটি সেলের জেলা সভাপতি মোহন ধীবর ও কুলটি ব্লকের এসটিএসি সেলের নেতা প্রসেনজিত বাউরি বলেন, “মহিলাদের আর্থিক উন্নতির জন্যই এই লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্প চালু করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া ওই মহিলাদের আর্থিক সুবিধা দিয়েছে। ভাল দিন ফিরে এসেছে। তাই পুজো করে ওরা এই সুদিনের দীর্ঘ মেয়াদের কামনা করেছেন মা লক্ষ্মীর কাছে।” মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন মহিলারা।