একুশের ভোটযুদ্ধে বিজেপিকে রুখে দিয়ে রাজ্যে তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় এসেছে তৃণমূল। আর তারপরেই ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে শুরু হয়েছে অন্যান্য রাজ্যের সংগঠন বিস্তার এবং নিজেদের অস্তিত্ব জানান দেওয়ার চেষ্টা। গোয়ার পরে এবার যেমন খোদ প্রিয়াঙ্কার আস্থাভাজন বলে পরিচিত উত্তরপ্রদেশের নেতা ললিতেশপতি ত্রিপাঠী তৃণমূলে যোগ দিতে পারেন। যার নেপথ্যে ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের হাত দেখতে পাচ্ছেন কংগ্রেস নেতারা।
প্রসঙ্গত, গোয়া, ত্রিপুরায় তৃণমূল ভাঙন ধরানোর পরে কংগ্রেস হাইকমান্ড সবে ক্ষত মেরামতের চেষ্টা করছিল। গোয়াতে দুই বিক্ষুব্ধ নেতাকে কার্যকরী সভাপতি করা হয়েছে। ত্রিপুরায় নতুন প্রদেশ সভাপতি নিয়োগ করে পাঁচ জনকে কার্যকরী সভাপতি করা হয়েছে। এরই মধ্যে কংগ্রেস হাই কমান্ডের কাছে খবর এসেছে, তৃণমূল উত্তরপ্রদেশে কংগ্রেসের নেতাদের দলে টানতে চেষ্টা করছে।
কংগ্রেস সূত্রের বক্তব্য, ললিতেশ সত্যিই তৃণমূলে যোগ দিলে তা গান্ধী পরিবারের জন্য অস্বস্তির বিষয় হয়ে উঠবে। কারণ, ললিতেশ উত্তরপ্রদেশ কংগ্রেসের সহ-সভাপতি ছিলেন। তিনি রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী, প্রাক্তন রেলমন্ত্রী কমলাপতি ত্রিপাঠীর প্রপৌত্র। পূর্ব উত্তরপ্রদেশে ললিতেশ কংগ্রেসের অন্যতম ব্রাহ্মণ মুখ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। দিন কুড়ি আগে তিনি কংগ্রেস থেকে পদত্যাগ করেছেন।
এখনও কিছু চূড়ান্ত না হলেও তৃণমূল শিবিরের খবর, ললিতেশকে শীর্ষ নেতৃত্ব যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছেন। কংগ্রেস নেতারা এত দিন জানতেন, ললিতেশ সমাজবাদী পার্টিতে যোগ দেবেন। কিন্তু এখন তাঁরা জানতে পারছেন, ললিতেশের সঙ্গে পিকের মাধ্যমে তৃণমূল নেতৃত্বের যোগাযোগ হয়েছে। তাঁকে উত্তরপ্রদেশে তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি করে দেওয়া হতে পারে। তাতে কংগ্রেস অস্বস্তিতে পড়বে।
গোয়ায় কংগ্রেসের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লুইজিনহো ফেলেরো-সহ একাধিক কংগ্রেস নেতা দল ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। তাঁদের হাত ধরেই গোয়ায় তৃণমূল মাঠে নেমেছে। ফেলেরো নিজেই স্বীকার করেছিলেন, কংগ্রেস থেকে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার জন্য পি কে-ই তাঁকে প্রস্তাব দেন। ২০১৭-য় গোয়ায় নির্বাচনের পরে কংগ্রেস গোয়ায় সরকার গড়ার জায়গায় ছিল। সেখান থেকে কংগ্রেসের বিধায়ক সংখ্যা কমতে কমতে এখন চারে এসে ঠেকেছে।
আবার ত্রিপুরায় একাধিক কংগ্রেস নেতা তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। শিলচরে সুস্মিতা দেব কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে আসার পরে তাঁকে ত্রিপুরায় দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তারই মধ্যে কার্যনির্বাহী সভাপতি পীযূষ কান্তি বিশ্বাস পদত্যাগ করায় তিনিও তৃণমূলে যোগ দিতে পারেন বলে জল্পনা তৈরি হয়েছিল। পরিস্থিতি সামলাতে বীরজিৎ সিনহাকে নতুন প্রদেশ সভাপতি নিয়োগ করে আরও পাঁচ জনকে কার্যকরী সভাপতি নিয়োগ করা হয়। কিন্তু গোয়া-ত্রিপুরায় ক্ষত মেরামত করতে না করতেই, এবার উত্তরপ্রদেশে ললিতেশের খবর এল।