বিজয়া দশমীর শুভেচ্ছা বিনিময় কি মিষ্টি ছাড়া হয়? বিসর্জনের বাদ্যি বাজতেই মিষ্টি কেনার ধুম দোকানে দোকানে। করোনার পর প্রতিদিনের মিষ্টি বিক্রিতে ভাটা পড়লেও এই বিজয়া উৎসবে মিষ্টির চাহিদা হাসি ফুটিয়েছে বর্ধমানের ব্যবসায়ীদের মুখে। মিহিদানা ও সীতাভোগের পাশাপাশি বিভিন্ন শুকনো মিষ্টির দেদার চাহিদা বর্ধমানের অধিকাংশ মিষ্টির দোকানে। প্রথা মেনে বিজয়ের সৌজন্য ও শুভেচ্ছা বিনিময়ে মিষ্টির বিকল্প নেই। তাই বিজয়ার মিষ্টির পাতে এখন বর্ধমানের ট্রেডমার্ক সীতাভোগ ও মিহিদানার পাশাপাশি শক্তিগড়ের ল্যাংচা এবং বিভিন্ন শুকনো মিষ্টির চাহিদাও তুঙ্গে। পার্বণ উপলক্ষে মিষ্টির চাহিদা থাকায় বিভিন্ন মিষ্টির সম্ভার সাজিয়েছেন দোকানদাররা। বিজয়াকে ঘিরে থাকে বাঙালির নানান পরিকল্পনা। বাঙালির এই বিজয়ায় রসনা তৃপ্তিতে মিষ্টিতে থাকে না কোনও বিধিনিষেধ। ভ্যারিয়েন্ট রসগোল্লা, রসে ডোবা রাজভোগ, জলভরা সন্দেশ, বোঁদে, হাল ফ্যাশনের চকোলেট সন্দেশ থেকে নিত্য নতুন মিষ্টিতে জিভে জল আসছে ক্রেতাদের। গতবছর করোনার জেরে বিজয়ায় মিষ্টি বিক্রি হলেও তা আশানুরূপ হয়নি। তবে সেই আক্ষেপ ভুলিয়ে দিচ্ছে এবারের বিজয়ার বাজার।
প্রসঙ্গত, দশমীর পর বর্ধমানের এখনও প্রতিমা নিরঞ্জনের পালা চলছে। পালা করে শুভ বিজয়ার সৌজন্য বিনিময় করছেন আট থেকে আশি। গতবছর করোনার সৌজন্যে আত্মীয়-স্বজন ও পরিচিতদের বাড়িতে গিয়ে বিজয়ার প্রণাম সারার পাঠ চুকলেও এবার সেই রীতিতে ফিরেছে মানুষ। প্রণাম হোক বা কোলাকুলি, বিজয়ার সৌজন্য বিনিময়ের প্রধান ব্যাপার হল মিষ্টিমুখ। সপ্তাহব্যাপী নানা রকমের মিষ্টি ও ভাজাভুজি স্ন্যাকস ঘটা করে খাওয়াদাওয়া চলছে। আগামী সপ্তাহজুড়েও চলবে একই রীতি রেওয়াজ। ফলে মিষ্টির দোকানে এখন লম্বা লাইন। মিষ্টি ব্যবসায়ীদের দাবি, গত বছরে যে আশঙ্কা ছিল, এবার সেই আশঙ্কা কিছুটা হলেও কমেছে। সাধারণ মানুষ উৎসবের জোয়ারে গা ভাসিয়েছেন। উৎসব শেষ করেই বিজয়ার সৌজন্যে বিভিন্ন মানুষের বাড়িতে যাতায়াত শুরু হয়েছে। সেখানে খালি হাতে যাচ্ছেন না কেউ। ফলে মিষ্টির চাহিদা রয়েছে। বিভিন্ন পার্বণ ছাড়া মিষ্টি বিক্রি অনেকটা কমে গেলেও এবার বিজয়া অনেকটাই হাল ফিরিয়েছে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের।
এপ্রসঙ্গে বর্ধমান সীতাভোগ মিহিদানা ট্রেডার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক তথা মিষ্টি ব্যবসায়ী প্রমোদকুমার সিং বলেন, প্রতিদিন যে মিষ্টি বিক্রি হতো, তা করোনার পর থেকে কমেছে। তবে বিভিন্ন উৎসবে মিষ্টির চাহিদা ব্যাপক। এবার বিজয়ার জন্য মিহিদানা সীতাভোগের পাশাপাশি শুকনো মিষ্টির দিকে ঝুঁকছেন মানুষ। লাড্ডুর চাহিদাও বেশ ভালো রয়েছে। অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সম্পাদক তথা মিষ্টি ব্যবসায়ী দেবাদিত্য চক্রবর্তী বলেন, “সীতাভোগ মিহিদানা তো আছেই, তবে আমাদের স্পেশাল কাশ্মীরি পোলাওয়ের চাহিদা আছে। বোঁদের চাহিদা বেশ ভালোই। রসগোল্লার বিভিন্ন ভ্যারিয়েন্ট ও সন্দেশ ভালোই কিনছেন মানুষ। গতবার পুজোর সময় ও তারপরে বাজার খুবই খারাপ ছিল। তবে এবার বাজার ভালোই। লক্ষ্মীপুজো পর্যন্ত বাজারে মিষ্টির চাহিদা থাকবে। তবে সবটাই আবহাওয়ার উপর নির্ভর করছে।”