গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চলতে থাকা কৃষক আন্দোলনের ছবি তুলে ধরতে মণ্ডপসজ্জায় হাওয়াই চটি ব্যবহার করেছিল পুজো কমিটি। আর এতেই ‘ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত’ হানা হয়েছে বলে অভিযোগে তুলে দমদম পার্ক ভারতচক্র পুজো কমিটিকে আইনি নোটিস ধরালেন এক আইনজীবী। প্রসঙ্গত, নয়া ৩ কৃষি আইনের বিরুদ্ধে চলা কৃষক আন্দোলনকে সংহতি জানাতে মণ্ডপের প্রবেশপথে ট্রাক্টর বসিয়েছে ভারতচক্র। মণ্ডপের গায়েও ছোট ছোট কাগজ সাঁটানো হয়েছে, যাতে লেখা— ‘পূর্ণ হোক কৃষকের স্বপ্ন’। যোগীরাজ্য উত্তরপ্রদেশের লখিমপুর খেরি-কাণ্ড নিয়েও পোস্টার লাগানো হয়েছে প্রবেশপথে। তাতে লেখা— ‘লখিমপুর খেরির পাশে দাঁড়ান’, ‘লখিমপুর খেরি, তোমায় ভুলছি না’।
পুজো কমিটিকে পাঠানো আইনে নোটিসে আইনজীবী পৃথ্বীবিজয় দাস লিখেছেন, ‘আমি নিজে এক জন সনাতন হিন্দু। জুতো-হাওয়াই চটি দিয়ে মণ্ডপ সাজানোর বিষয়টি আমি মেনে নিতে পারছি না। এই ধরনের চিন্তাভাবনা আমার ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত হেনেছে। সাধারণ মানুষের ধর্মবিশ্বাসে আঘাত হানতে গোটাটাই ইচ্ছাকৃত ভাবে করা হয়েছে।’ মণ্ডপ থেকে যদি শীঘ্র জুতো না সরিয়ে নেয় পুজো কমিটি, তা হলে কোনও রকম আগাম বার্তা ছাড়াই তাদের বিরুদ্ধে তিনি কড়া ব্যবস্থা নেবেন বলে জানিয়েছেন ওই আইনজীবী। আবার দুর্গামণ্ডপ কেন জুতো দিয়ে সাজানো হবে, এই প্রশ্ন তুলে বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছে বিজেপিও।
ভারতচক্র পুজো কমিটির তরফে এ প্রসঙ্গে বলা হয়, আমাদের পুজো থিম কৃষক আন্দোলনকে উৎসর্গ করে। আমরা বলতে চেয়েছি, ‘ধান দেব না, মান দেব না’। সন্ন্যাসী, তেভাগা থেকে শুরু করে সাম্প্রতিক কালের কৃষক আন্দোলনকে তুলে ধরাই আমাদের পরিকল্পনা ছিল। মণ্ডপে প্রবেশের রাস্তাটিকে আমরা ওই ভাবে সাজিয়েছি। চটি এখানে একটি প্রতীকী বিষয়। মণ্ডপের ভিতরে কোথাও চটি নেই। গত ২১ বছর ধরে আমরা নিষ্ঠার সঙ্গে পুজো করছি। কারও ভাবাবেগে আঘাত করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়। আমরা যা করেছি অনেক ভেবে চিন্তেই করেছি। আইনি নোটিস হাতে পেয়েছি আমরা। আমরাও এর আইনি জবাব দেব।