উত্তরপ্রদেশের খেরি লখিমপুর কাণ্ডের দ্বিতীয় দিনের শুনানিতে আরও বিপাকে যোগী সরকার। এদিন মামলার শুনানির শুরুতেই প্রধান বিচারপতি এনভি রমণ জানান, তাঁর কাছে উত্তরপ্রদেশ থেকে শতাধিকস ই-মেইল এসেছে এই মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে। মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি করতে জনস্বার্থ মামলা দায়েরকারী দুই আইনজীবী ও সরকারি পক্ষের আইনজীবী ছাড়া কাউকেই কথা বলতে দেওয়া হবে না।
বৃহস্পতিবার থেকেই সুপ্রিম কোর্টে লখিমপুর মামলার শুনানি শুরু হয়েছে। গতকালই শীর্ষ আদালতের তরফে উত্তরপ্রদেশ সরকারকে এফআইআরের যাবতীয় তথ্য, মৃত আটজন সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য সহ মামলার যাবতীয় গতিপ্রকৃতি নিয়ে একটি রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছিল। এদিকে, গতকালই পুলিশ লখিমপুরকাণ্ডে অভিযুক্ত দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অজয় কুমার মিশ্রের ছেলে আশীষ মিশ্রকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হাজিরা দিতে বলা হয়। যদিও আজ মন্ত্রীপুত্র সেই সমন এড়িয়ে গিয়েছেন এবং হাজিরা দেননি।
এদিন মামলার শুরুতেই উত্তরপ্রদেশ সরকারের তরফে জানানো হয়, আইনজীবী হরিশ সালভে সরকারের তরফে মামলটি লড়বেন। তবে শুনানির শুরুতেই তিনি প্রযুক্তগত সমস্যার মুখে পড়েন, ফলে তাঁর বদলে উত্তরপ্রদেশের এএজি সরকার পক্ষের হয়ে বক্তব্য রাখেন। পরে অবশ্য তিনি শুনানিতে যোগ দেন।
শুনানির শুরুতেই প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আমাদের কাছে শতাধিক ই-মেইল এসেছে। আমরা দুই আইনজীবী ও রাজ্যের তরফে হাজির কাউন্সিল ছাড়া কাউকে কথা বলতে দেওয়া হবে না।’
গতকাল সুপ্রিম কোর্টের তরফে যে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছিল, তা জমা দেওয়া হয়েছে বলে জানান আইনজীবী সালভে। তিনি বলেন, ‘প্রাথমিক রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়েছে, তবে আগামিদিনে মামলার আরও নানা দিক সামনে আসবে। যার বিরুদ্ধে প্রধান অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে, তাঁর আজই হাজির হওয়ার কথা থাকলেও তাঁকে আগামিকাল সকাল ১১টা অবধি সময় দেওয়া হয়েছে পুলিশের সমনের জবাব দিয়ে হাজিরার জন্য।’
প্রধান বিচারপতি প্রশ্ন করেন, ‘এফআইআরে দেখা যাচ্ছে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ৩০৩ ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। তবে বাকি অপরাধীদের মতোই তাঁকেও গণ্য করা হচ্ছে কেন?’ জবাবে হরিশ সালভে বলেন, ‘ময়নাতদন্তের রিপোর্টে গুলির আঘাতের কোনও প্রমাণ মেলেনি। যেভাবে গাড়িটি চালানো হয়েছিল, তা দেখে মনে করা হচ্ছে ৩০২ ধারায় মামলা দায়ের করা উচিত। তবে আমি বলতে চাই যে, এই অভিযোগগুলি হয়তো সত্যিই। যতদিন বিচারপ্রক্রিয়া চলছে, ততদিন হয়তো শব্দটি ব্যবহার করলেও যদি প্রমাণগুলি সত্য বলে প্রমাণিত হয়, তবে এটিকে ৩০২ ধারার (খুনের) মামলা হিসাবেই গণ্য করা উচিত।’