তিন দিন আগে আকাশ পথে বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শন করার পর জলমগ্ন আরামবাগে দাঁড়িয়েই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, এটা ম্যান মেড বন্যা। ডিভিসি ক্রাইম করেছে। আরামবাগ থেকে নবান্নে ফিরে ফের সাংবাদিক বৈঠক করে দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ডিভিসি না জানিয়ে জল ছেড়ে বাংলাকে ভাসিয়ে দিল।
আমি ক্ষতিপূরণ চাইব। সেদিনই মমতা বলেছিলেন, আমি আগেও চিঠি লিখেছিলাম। ফের প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখব। মঙ্গলবার বেশি রাতে জানা গেল, মোদীকে চিঠি লিখেছেন মমতা।
সেই চিঠিতে যেমন রয়েছে ডিভসির বিরুদ্ধে নালিশ তেমনই রয়েছে স্থায়ী সমাধানের দাবি। মমতা দাবি জানিয়েছেন, ঝাড়খণ্ড এবং বাংলাকে একজসঙ্গে নিয়ে স্বল্প মেয়াদী ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা করুক কেন্দ্রীয় সরকার।
বন্যা সমস্যার স্থায়ী সমাধানে দিল্লীর হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেইসঙ্গে বলেছেন, এ ভাবে ডিভিসি প্রতিবার না জানিয়ে জল ছাড়বে, আর বাংলা ভেসে যাবে তা হতে পারে না। লক্ষ লক্ষ মানুষ বিপন্ন হচ্ছেন। এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী উল্লেখ করেছেন ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে ২ অক্টোবর পর্যন্ত কী ভাবে জল ছেড়েছে ডিভিসি। সেদিন নবান্নের সাংবাদিক সম্মেলনেই তারিখ, সময় উল্লখ করে কত কিউসেক করে জল ছাড়া হয়েছিল তার পরিসংখ্যান দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেছিলেন, সব মিলিয়ে প্রায় ১০ লক্ষ কিউসেক জল ছেড়ে দিয়েছে।
যদিও ডিভিসি গত সপ্তাহেই প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়ে দিয়েছিল, জল ছাড়ার ব্যাপারে তারা কোনও সিদ্ধান্ত নেয় না। তার জন্য একটা কমিটি রয়েছে। তাতে রয়েছেন, কেন্দ্রীয় জল মিশনের এক আধিকারিক এবং ঝাড়খণ্ড ও পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সেচ দফতরের প্রধান ইঞ্জিনিয়র।
প্রধানমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী উল্লেখ করেছেন, দামোদরের জল ধারণ ক্ষমতা ৯৫ হাজার কিউসেক। সেখানে জল ছাড়া হয়েছে ২ লক্ষ ৪০ হাজার কিউসেক। মমতা এও লিখেছেন, ৪ অগস্টও তিনি প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছিলেন প্লাবন নিয়ে। কিন্তু দিল্লী সেই চিঠি নিয়ে কোনও রা কাড়েনি।