ফের দ্বিধাবিভক্ত পদ্মশিবির। আমিষ নাকি নিরামিষ? দুর্গাপুজোয় তিনদিনের খাওয়া-দাওয়া শুধুই খিচুড়ি আর বেগুনভাজা, না কি সপ্তমী আর নবমীর মেনুতে থাকবে মাছ-খাসির মাংসও? এটা নিয়েই আপাতত সংশয়ে বঙ্গ বিজেপির পুজোর উদ্যোক্তারা। পুজো হবে কি না, তা নিয়ে মতানৈক্য ছিলই। দলের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ পুজো নিয়ে ততটা আগ্রহী নন। নয়া রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার পুজোর পক্ষেই। তাই রাজ্য সভাপতির অমত না থাকায় গতবারের থেকে আয়োজনে কাটছাঁট করেও পুজো হচ্ছে সল্টলেক ইজেডসিসিতে। দলের মধ্যে মতান্তরের মধ্যেই শেষমেশ গেরুয়া শিবির পুজোর প্রস্তুতি শুরুও করে দিয়েছে। আর অনুমতি যখন মিলেছেই তখন নমো-নমো করে তো আর পুজো করা যায় না। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে ইজেডসিসি চত্বরে। আর সপ্তমী থেকে নবমীতে পেটপুজোও দস্তুর। দুর্গাপুজোর প্রস্তুতি নিয়ে গত রবিবারই বিজেপির রাজ্য দপ্তরে বৈঠক হয়েছে।
এই পুজোর প্রধান উদ্যোক্তার মধ্যে রয়েছেন দলের অন্যতম দুই রাজ্য সম্পাদক সব্যসাচী দত্ত ও সংঘমিত্রা চৌধুরি। সমস্ত আয়োজনের দায়িত্বে দলের মহিলা মোর্চা ও সাংস্কৃতিক সেল। গত বছর ইজেডসিসির পুজোর সংকল্প করেছিলেন রাজ্য সহ-সভাপতি প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়। নিয়ম অনুযায়ী একবার সংকল্প করলে তিনবার পুজো করতেই হয়। তাই এবারও দলের তরফে প্রতাপবাবুই প্রধান দায়িত্বে এই পুজোর আয়োজনের। প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “বিজেপি পার্টি নয়। দলের কার্যকর্তা ও শুভানুধ্যায়ীরাই এই পুজো করছে। পুজোর তিনদিন দুপুরের মেনুতে খিচুড়ি আর বেগুনভাজা করার ভাবনাচিন্তা চলছে। অনেকে আবার বলছেন সাধারণ নিয়মে মাছ-খাসির মাংসও থাকুক মেনুতে।” বিজেপি দলের বিভিন্ন বৈঠকে খাওয়ার মেনুতে সাধারণত নিরামিষ আয়োজন থাকে। তাই পুজোর ক’দিন আয়োজকদের একাংশ চাইছেন নিরামিষ খাবার হোক। তাতে খরচও কম হবে। আরেকদল অবশ্য চাইছে নিরামিষ-আমিষ দুই হোক। আর এই মেনু নিয়েই আপাতত ধন্দের মুখে গেরুয়াশিবির।
উল্লেখ্য, গত বছর করোনা আবহেও হাই কোর্টের সমস্ত নির্দেশ মেনেই সল্টলেকের ইজেডসিসিতে দুর্গাপুজোর আয়োজন করেছিলেন বিজেপি নেতা-কর্মীরা। গতবছর কৈলাস বিজয়বর্গীয়, মুকুল রায়, সব্যসাচী দত্তরা পুজোর উদ্যোক্তাদের মধ্যে থাকলেও দিলীপ ঘোষ সেভাবে আগ্রহ দেখাননি। এবারও দিলীপ ঘোষ জানিয়ে দিয়েছিলেন পুজো করা পার্টির কাজ নয়। তবে নয়া রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের থেকে অনুমতি আদায় করে পুজোর আয়োজন শুরু করেছেন দলের একাংশ। পুজো নিয়ে যে নিজের পুরনো অবস্থানেই দিলীপবাবু অনড় তা তিনি মঙ্গলবারও বুঝিয়ে দিয়েছেন। এদিন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ—সভাপতি বলেন, “আমি কোনও পুজোর বিপক্ষে নই। তবে পার্টির কাজ পুজো করা নয়। সকলে পুজো করে, আমরা অংশগ্রহণ করি। কিছু লোকজন গতবার পুজো করেছিলেন। এবারও করছেন। পারলে যাব।”