২০২১ সালের নোবেল পুরস্কার ঘোষণা শুরু করা হল। সোমবারই ঘোষিত হয় এই বছরের প্রথম নোবেলজয়ীদের নাম। ফিজিওলজি বা মেডিসিন বিভাগে নোবেল পুরস্কার পেলেন ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই গবেষক ডেভিড জুলিয়াস এবং আর্দেম পাটাপোশিয়ান তাপমাত্রা এবং স্পর্শের জন্য রিসেপটর আবিষ্কার করায় তাঁদের এ বছরের নোবেলের জন্য মনোনীত করা হয়েছে। সোমবার নোবেল কমিটির সেক্রেটারি জেনারেল থমাস পার্লম্যান যৌথভাবে তাঁদের নাম ঘোষণা করেন। দুই মার্কিন গবেষকের এই যুগান্তকারী আবিষ্কার আগামীদিনে শারীরবিদ্যা সংক্রান্ত গবেষণায় পথ দেখাবে বলেই মনে করা হচ্ছে। কোভিড অতিমারী পর্বে নিজ নিজ দেশে বসেই নোবেল পুরস্কার ও সংশাপত্র গ্রহণ করতে পারবেন বিজয়ীরা। উল্লেখ্য, লেবাননে জন্মগ্রহণকারী আর্দেম ৫৪ বছর বয়সী পাটাপোশিয়ান ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক। আর্মিনিয়ান-আমেরিকান এই অধ্যাপক মলিকিউলার বায়োলজি এবং স্নায়ুবিজ্ঞান নিয়ে গবেষক করছেন। পাশাপাশি ৬৫ বছরের ডেভিড জুলিয়াসও মলিকিউলার মেকানিসমে গবেষণারত। ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এই অধ্যাপক ২০১০ সালে জীবন বিজ্ঞান এবং মেডিসিন বিভাগে শ-প্রাইজ পেয়েছিলেন। ২০২০ সালেও একই বিভাগে তাঁকে পুরস্কৃত করা হয়।
এদিন নোবেল কমিটির পক্ষ থেকে একটি টুইট করে জানানো হয় দুই মার্কিন নোবেলজয়ীর গবেষণার বিষয়বস্তু। ডেভিড জুলিয়াস এবং আর্দেম পাটাপোশিয়ানের এই গবেষণা ব্যাখ্যা করে কী ভাবে ঠান্ডা, গরমের স্পর্শ এবং অনুভূতি মানবশরীরের স্নায়ুকে সিগন্যাল পাঠাতে সক্ষম হয়। তক এবং শরীরের অন্য অঙ্গগুলি স্টিমুলিতে সাড়া দেয় এবং তার জন্য প্রেশার সেনসিটিভ সেলগুলিকে কী ভাবে ব্যবহার করা হয়, তা নিয়ে বিস্তারিত গবেষণা করেছেন তাঁরা। কাঁচা লঙ্কার মতো জ্বলন সৃষ্টিকারী একটি অনুভূতিতে তক কী ভাবে সাড়া দেয়, তা নিয়েও ব্যাখ্যা রয়েছে গবেষণায়। কমিটির তরফে জানানো হয়েছে, তাঁদের আবিষ্কার তাপ, ঠান্ডা এবং যান্ত্রিক শক্তি অনুধাবনের আণবিক ভিত্তি ব্যাখ্যা করেছে। অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক পরিবেশের অনুভব এবং ব্যাখ্যা বোঝার ক্ষেত্রে যা নতুন দিগন্ত খুলে দেবে। তাঁদের যুগান্তকারী আবিষ্কার ব্যাখ্যা করে স্নায়ুতন্ত্র কী ভাবে তাপ, ঠান্ডা এবং যান্ত্রিক উদ্দীপনা অনুভব করে। গত বছর চিকিৎসাবিদ্যায় নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন হার্ভে জে অল্টার, চার্লস এম রাইস এবং মাইকেল হাউটন। তাঁরা হেপাটাইটিস সি-র জীবাণু আবিষ্কার করে এই সম্মান অর্জন করেন।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এ বছরও কোভিড বিধিনিষেধ মেনেই নোবেল পুরস্কার ঘোষণা করা হচ্ছে। দেশে বসেই পুরস্কার ও সংশাপত্র পেয়ে যাবেন বিজয়ীরা। ফিজিওলজি বা মেডিসিনের পর মঙ্গলবার ঘোষণা করা হবে পদার্থবিদ্যার পুরস্কার। বুধবার ঘোষণা হবে রসায়ন, বৃহস্পতিবার দেওয়া হবে সাহিত্যের নোবেল পুরস্কার। আগামী ১১ই অক্টোবর দেওয়া হবে অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার। গত বছর থেকে নোবেল পুরস্কার বিজয়ীরা অতিরিক্ত ১০ লাক ক্রাউন বা ১ লাখ ১০ হাজার ডলার পাচ্ছেন। সুইডিশ সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, পুরস্কার অর্থ ৯ মিলিয়ন ক্রাউন বা ৩ লাখ ৮৮ হাজার ৩১৭.৬৭ ডলার থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ মিলিয়ন ক্রাউন বা ৪ লাখ ৩১ হাজার ৩৯০ ডলার।