বাংলায় ২০০ আসন জয়ের স্বপ্ন দেখেছিলেন তাঁরা। কিন্তু একুশের ভোটে বাংলায় ব্যাপক ভরাডুবি ঘটে গেরুয়া শিবিরের। মাত্র ৭৭ আসনেই থেমে যেতে হয় তাঁদের। আর তারপর থেকেই বঙ্গ রাজনীতি নিয়ে একেবারে চুপ মেরে গিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহ। বিধানসভা ভোটের ফলপ্রকাশের পর থেকেই বাংলার রাজনীতি নিয়ে টু শব্দটি করছেন না বিজেপির দুই শীর্ষ নেতা তথা দেশের প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
দুই নেতার বাংলা নিয়ে মুখে আঙুল দেওয়ার কারণ নিয়ে বিজেপির অন্দরেই চর্চা শুরু হয়েছে বেশি। দলের রাজ্য নেতাদের একাংশের বক্তব্য, বিধানসভা নির্বাচনে মোদী-শাহ প্রায় নিশ্চিত ছিলেন যে দল এবার বাংলায় ক্ষমতায় আসছেই। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দল প্রাপ্ত আসনে আশির ঘর পেরতে না পারায় দু’জনেই হতাশ। দলের আর এক অংশ আবার বলছে, দুই নেতার বাংলা নিয়ে মুখে আঙুল দেওয়ার পিছনে রাজ্য বিজেপির জন্য তাৎপর্যপূর্ণ বার্তা আছে। তা হল, দিল্লীর প্রতি নির্ভরতা কমানো। যদিও দিল্লী নির্ভরতা দিল্লীরই সিদ্ধান্ত বলে একান্তে মানছেন দলের সব শিবিরই।
প্রসঙ্গত, গত ৫ মে তৃতীয়বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজভবনে শপথ অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার খানিক পরে টুইট করে তৃণমূল নেত্রীকে শুভেচ্ছা জানান প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু ২০১৬-র বিধানসভা ভোটের ফল প্রকাশের পর সরাসরি ফোন করেই শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী। এবার প্রধানমন্ত্রীর ফোন না পেয়ে প্রকাশ্যেই খানিক উষ্মাও প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। ফোন দূরের কথা, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ টুইট করে শুভেচ্ছা জানানোরও ধার ধারেননি।
শাহ অবশ্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসাবে নতুন সরকার শপথ নেওয়ার পর দিনই ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনার তদন্তে রাজ্যে কেন্দ্রীয় টিম পাঠিয়ে দেন। আবার ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের সময় অবশ্য বাংলার পাশে থাকার বার্তা দিয়ে টুইট করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তার একটিতে মুখ্যমন্ত্রীকে খানিক আক্রমণও ছিল। কিন্তু রাজনীতি নিয়ে মুখে রা কাড়ছেন না। অন্যদিকে আগস্টের শেষে মুখ্যমন্ত্রী দিল্লীতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকার সেরে আসেন। প্রধানমন্ত্রীর অফিস সেই বৈঠকের ছবি টুইট করে। ইয়াসের সময় মুখ্যমন্ত্রীকে ফোন করে পরিস্থিতি জানেন। ভার্চুয়াল বৈঠক করেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী বাংলার রাজনীতি নিয়ে টু শব্দটি করেননি।