করোনা আবহ ঠিকই। তবে একই সঙ্গে পুজো আসতেও হাতে আর মাত্র কয়েকটা দিন। বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব। বছরভরের যা কিছু মলিন, চারটে দিন সে সমস্ত সরিয়ে, সকলেই চায় একটু প্রাণ ভরে বাঁচতে। যতই নিয়মের বিধি নিষেধ থাকুক না কেন, এই চারটে দিন মানুষ যে পথে নামবেই, তা ভালই জানে কলকাতা মেট্রো কর্তৃপক্ষ। সে সংখ্যায় ঊনিশ-বিশ হতে পারে। সে কারণেই উৎসবপ্রিয় বাঙালির কথা মাথায় রেখে পুজোয় একগুচ্ছ পরিকল্পনা নিয়েছে মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ। গাড়ির সংখ্যা তো বাড়ছেই। সঙ্গে মেট্রোয় চড়ার ক্ষেত্রেও দেওয়া হচ্ছে বিশেষ সুবিধা।
যাত্রী স্বচ্ছন্দ্যের কথা মাথায় রেখে কলকাতা মেট্রো আগামী ৪ অক্টোবর সোমবার থেকে কর্মব্যস্ত পাঁচদিন (সোমবার থেকে শুক্রবার) আরও ১০টি অতিরিক্ত ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কবি সুভাষ এবং দক্ষিণেশ্বরের মধ্যে চলবে ৮৩টি আপ এবং ৮৪টি ডাউন ট্রেন। দিনের ব্যস্ততম সময়ে পাঁচ মিনিট অন্তর মেট্রো চলবে সোমবার থেকে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে ১১টা, বিকেলে ৪টা থেকে ৫টা, সন্ধ্যা ৬টা থেকে ৭টা আপে পাঁচ মিনিটের ব্যবধানে মেট্রো পাওয়া যাবে। অন্যদিকে সকাল ৯টা থেকে ১০টা, বেলা ১১টা থেকে ১২টা, বিকেল ৫টা থেকে ৬টা এবং সন্ধ্যা ৭টা থেকে সাড়ে ৭টা পর্যন্ত ডাউনে প্রতি পাঁচ মিনিট অন্তর মেট্রো পাওয়া যাবে।
দক্ষিণেশ্বর, দমদম এবং কবি সুভাষ থেকে আগের মতোই দিনের প্রথম ট্রেন সকাল সাড়ে ৭টায় ছাড়বে। দক্ষিণেশ্বর থেকে শেষ ট্রেন ৯টা ১৮ মিনিটে এবং দমদম ও কবি সুভাষ থেকে সাড়ে ৯টায় দিনের শেষ মেট্রো পাওয়া যাবে। ইস্ট ওয়েস্ট মেট্রো পরিষেবা আগের মতোই অপরিবর্তিত থাকছে। যাদের স্মার্ট কার্ড রয়েছে তারাই মেট্রো পরিষেবা নিতে পারবে। তবে পুজোর সময় এই নিয়মে কিছুটা শিথিলতা থাকবে। কলকাতা মেট্রোর জেনারেল ম্যানেজার মনোজ জোশি জানান, বর্তমানে রাত সাড়ে ন’টায় দুই প্রান্ত থেকে শেষ মেট্রো ছাড়লেও পুজোর সময় সেই সময়সীমা বাড়ানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
তাঁদের সুবিধার কথা মাথায় রেখে অতিরিক্ত প্রায় ছ’ লক্ষ স্মার্ট কার্ড রাখা হবে। যে সমস্ত যাত্রী শুধুমাত্র পুজোর সময় স্মার্ট কার্ডের মাধ্যমে যাতায়াত করবেন, তাঁরা প্রয়োজন হলে পুজোর শেষে স্মার্ট কার্ড ফেরত দিয়ে রিফান্ড নিতে পারবেন। আগামী সপ্তাহে, সম্ভবত সোমবারই এই সমস্ত বিষয় নিয়ে চূড়ান্ত আলোচনায় বৈঠকে বসছে মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ।
শনিবার যাত্রী স্বচ্ছন্দ্যের কথা মাথা রেখে টলিগঞ্জে মহানায়ক উত্তম কুমার মেট্রো স্টেশনে একটি লিফটের উদ্বোধন করা হল। একই সঙ্গে ২ অক্টোবর, মহাত্মা গান্ধীর জন্মদিন উপলক্ষে মহাত্মা গান্ধী মেট্রো স্টেশনে বিশেষ অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয় কলকাতা মেট্রোর তরফে। যাত্রীদের মাস্ক বিলি করা হয়। করোনাকালে সতর্কতা বাড়ানোর পাশাপাশি আয় বাড়াতে মেট্রোর স্মার্ট কার্ডের ব্র্যান্ডিংও করা হয়েছে।
প্রয়োজন মতো মেট্রো বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে এ বছর পুজোয় সারারাত মেট্রো চালানোর কোনও পরিকল্পনা এখনও নেই বলেই তিনি জানান। মনোজ জোশির কথায়, “রাজ্য সরকার এবং কলকাতা হাইকোর্টের যে নির্দেশিকা আসবে সেই মতো আমরা কাজ করব।” দুর্গাপুজোয় যাত্রীর চাপের কথা মাথায় রেখে অতিরিক্ত ৬ লক্ষ স্মার্ট কার্ড রাখা হচ্ছে। মনোজ জোশি জানান, এমন অনেক যাত্রী আসবেন, যাঁরা নিয়মিত মেট্রোয় যাতায়াত করেন না।