নেই বিন্দুমাত্র পরিবর্তন। তালিবান আছে তালিবানেই। আফগানিস্তানে নতুন করে ক্ষমতা দখলের পর যতই নারীর অধিকার রক্ষা-সহ নানা বিষয়ে আশ্বাসের বুলি আওড়াক তারা, শেষ পর্যন্ত যে তাদের স্বভাবে কোনও হয়নি তা বারবার স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। ক্রমশ প্রকট হয়ে উঠেছে তাদের ভয়াবহতা। এবার মাসকয়েকের ব্যবধানে ফের মহিলাদের প্রতিবাদ মিছিলে গুলি চালানোর অভিযোগ উঠল তালিবানের বিরুদ্ধে।
বৃহস্পতিবার পূর্ব কাবুলের এক স্কুলের সামনে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন কয়েকজন মহিলা। তাঁদের দাবি ছিল, অবিলম্বে স্কুল চালু করতে হবে। এবং মেয়েদের অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে। সংবাদসংস্থা এএফপির খবর অনুযায়ী, বিক্ষোভে হঠাৎই শূন্যে কয়েক রাউন্ড গুলি চালায় তালিবান যোদ্ধারা। ছিনিয়ে নেওয়া হয় তালিবান বিরোধী ব্যানারও। এদিনের বিক্ষোভের খবর সংগ্রহ করতে গিয়েও তালিবানের হাতে কয়েকজন বিদেশি সাংবাদিক নিগৃহীত হন বলেও অভিযোগ। তাঁদের রাইফেলের বাঁট দিয়ে আঘাত করা হয় বলে দাবি। ‘আমাদের কলম ভেঙে দেওয়া যাবে না, আমাদের বই পুড়িয়ে দেওয়া চলবে না, আমাদের স্কুল এখনই খুলতে হবে’, এমন স্লোগান লেখা ব্যানার হাতে এদিন বন্ধ ওই স্কুলের সামনে বিক্ষোভ দেখান কয়েকজন মহিলা অভিভাবক। তাঁদের দাবি, শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে অশান্তিতে উসকানি দেয় তালিবান। মহিলাদের হঠাতে আচমকা শূন্যে গুলি চালায় তারা।
উল্লেখ্য, মহিলাদেরর প্রতি তাদের ঘৃণ্য পুরষতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গি যে একটু বদলায়নি তা এই কয়েক সপ্তাহে একেবারে স্পষ্ট করে দিয়েছে তালিবান। কয়েকদিন আগেই কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়ে মহিলাদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে জেহাদি সংগঠনটি। জানিয়ে দেওয়া হয়েছে পড়ুয়া, শিক্ষিকা বা শিক্ষাকর্মী, কোনও মহিলাই আর ঢুকতে পারবেন না কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়ে। আফগানিস্তানের সবচেয়ে বড় বিশ্ববিদ্যালয়ে এহেন তালিবানি ফতোয়ায় দেশে মহিলাদের শিক্ষা ও অধিকার নিয়ে বড়সড় অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। তার মধ্যেই ফের মহিলাদের মিছিলে গুলি চালিয়ে তালিবান প্রমাণ করে দিল, প্রথমবারের মতো দ্বিতীয় দফার তালিবান যুগেও আফগান মহিলাদের বাঁচতে হবে প্রশাসনের ফতোয়া ও সন্ত্রাসকে সঙ্গী করেই।