রাজনৈতিক বিশ্বস্ততা শব্দটা যখন ক্রমেই অবিশ্বাসযোগ্য, পলকা হয়ে উঠছে তখন তিনি বিশ্বস্ততার নতুন কাব্য লিখছেন। তিনি শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, ৭৭ বছর বয়সে লড়াইয়ে নেমে কয়েক মাস আগে আগে ভবানীপুরে গোহারা হারিয়েছিলেন বিজেপি প্রার্থী রুদ্রনীল ঘোষকে। এবং সেখানেই থামেননি। নন্দীগ্রামে সামান্য ভোটে হারা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলার আগেই ওই আসনটি হেলায় মমতার জন্য ছেড়ে দেন শোভন দেব চট্টোপাধ্যায়। তিনিই সকাল-সকাল ছেলেকে নিয়ে ভোট দিতে এলেন নিজের কেন্দ্রে।
এ দিন শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘আমি খুব খুশি আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ভোট দিচ্ছি। মমতা সারা দেশের নেত্রী। তিনি যত বেশি ভোটে জিতবেন ততই তাঁর মর্যাদা বৃদ্ধি হবে। দেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ নেত্রী তিনি। ভবানীপুরের ভোট বাড়বে’।
শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের দুই পুত্র সায়নদেব ও ঈশানদেব। এই মুহূর্তে সায়নদেব তৃণমূলের যুব কংগ্রেসের রাজ্য সম্পাদক। এদিন শোভনের সঙ্গে এসেছিলেন সায়নদেবও। কিন্তু তখনও ভবানীপুরে ভোটদান অনেকটাই স্তিমিত । কিন্তু তাতে এতটুকুও অস্বস্তিতে পড়ছেন না শোভনদেব। ভবানীপুরকে তিনি হাতের তালুর মতো চেনেন। তাই বললেন, ‘বেলা বাড়তেই ভবানীপুরে ভোট বাড়বে। এটাই ট্রেন্ড।‘
দেখা গেল তার কথা ফৰলতেও শুরু করেছে। সকাল নটায় যে ভবানীপুরে ভোট ছিল মাত্র ৮ শতাংশেরও কম, বেলা ১১ টা বাজতেই সেখানে ২১ শতাংশের বেশি ভোট পড়ল।
নেত্রীর লড়াই থামলে আরো একবার লড়তে হবে তাঁকে। খড়দহ পুনর্নির্বাচনে তৃণমূলের প্রার্থী তিনি। প্রার্থী কাজল সিনহার অকালপ্রয়াণের পর তাকেই যোগ্যতম হিসেবে বিবেচনা করেছে দল। তবে সেসব নিয়ে কোনও দুশ্চিন্তাই নেই শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের। নেত্রী তাঁকে ভরসা করেছিলেন, বড় ব্যবধানের জয় এনে নেত্রীকেও প্রাপ্য বুঝিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। আর আজকের ভোটটা মিটলে বৃত্তটা সম্পূর্ণ। অবিশ্বস্ততা, অস্বচ্ছতার সঙ্গে রাজনৈতিক দায়বদ্ধতার যে সমান্তরাল আখ্যান তাতে লেখা থাকবে তাঁর নাম।