ছাড়পত্র দেয়নি কেন্দ্রের পরিবেশ দপ্তর। ফলত বিশ বাঁও জলে বিদ্যাধরী নদীর উপর সেতু নির্মাণের কাজ। স্বভাবতই মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্নই থেকে গিয়েছে সুন্দরবনের ফটক। সেতুটি তৈরি হয়ে গেলে গদখালি থেকে সরাসরি গোসাবায় যাওয়া যেত সড়কপথে। কেন্দ্রের উদাসীনতার কারণেই গ্রামবাসী ও পর্যটকদের এখনও ভরসা করতে হচ্ছে সেই জলযানেকেই। এদিকে, এই প্রকল্প ঝুলে থাকায় খরচ দিনে দিনে বেড়েই চলেছে। এ নিয়ে উদ্বেগে সুন্দরবন বিষয়ক দপ্তর। রাজ্যে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর মুখ্যমন্ত্রী গোসাবায় এসেছিলেন। সেই সময় তিনি গোসাবাকে সামনে রেখে সুন্দরবনে পরিবেশবান্ধব পর্যটন শিল্প গড়ে তোলার আশ্বাস দিয়েছিলেন। পাশাপাশি পর্যটনের এই বিকাশের জন্য মূল ভূখণ্ডে থাকা গদখালির সঙ্গে বিদ্যাধরীর ওপারের গোসাবাকে জুড়তে সেতু নির্মাণের কথা ঘোষণা করেছিলেন। পরবর্তীকালে ঠিক হয়, এই কাজটি পূর্তদপ্তর করবে। তবে টাকা দেবে সুন্দরবন বিষয়ক দপ্তর।
তারপর সেইমতোই কাজ শুরু হয় সাত-আট বছর আগে। সেতুর নকশা, মাটি পরীক্ষা ইত্যাদি করতে গিয়েই অনেকটা সময় গিয়েছে। গদখালির কোন জায়গা থেকে সেতু উঠবে এবং গোসাবার কোথায় গিয়ে নামবে, তা ঠিক করতেও সময় লেগেছে বেশ খানিকটা। তবে মন্টুরাম পাখিরা সুন্দরবন বিষয়ক মন্ত্রী থাকাকালীন কিছু কাজ হয়েছিল। এই সেতু গড়ার জন্য যাঁদের জমি নেওয়া হয়েছে, তাঁরা ইতিমধ্যেই ক্ষতিপূরণের টাকা পেয়ে গিয়েছেন। কাজ শুরুর সব রকম প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারপর আর কাজ এগোয়নি।
এদিন সুন্দরবন বিষয়ক মন্ত্রী বঙ্কিম হাজরা বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকারের টালবাহানার কারণে কাজ এগয়নি। আমি নিজে গদখালি ও গোসাবা গিয়ে দেখে এসেছি। এ কারণে গোসাবা থানা অন্যত্র সরাতে হয়েছে। এখন কেন্দ্রীয় পরিবেশ দপ্তর উপকূল আইনের নানা দিক তুলে ধরে সবুজসঙ্কেত দিতে গড়িমসি করছে। নাহলে অনেক আগেই এই কাজ শুরু হয়ে যেত। এই সেতু তৈরি হয়ে গেলে গোসাবা যেতে আর নৌকায় করে বিদ্যাধরী পেরতে হবে না এপারের বাসিন্দাদের। কম সময়ে দ্রুত এই দ্বীপাঞ্চলে যাতায়াত করা যাবে।” স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে, গোসাবা থেকে গদখালি যেতে আসতে সারা বছর নৌকাই ভরসা। রোগী নিয়ে যাওয়ার সময় সমস্যায় পড়তে হয় পরিজনদের। এই সেতু দ্রুত নির্মাণ হলে হাজার হাজার মানুষ উপকৃত হবেন। শুধু তাই নয়, পর্যটনের ক্ষেত্রে এক নতুন দিকও খুলে যাবে। এখন গাড়ি নিয়ে সুন্দরবন বলতে স্রেফ ঝড়খালি যাওয়া যায়। এই সেতু তৈরি হয়ে গেলে পাখিরালয় পর্যন্ত যাওয়া যাবে গাড়িতে। বাড়বে পর্যটকের সংখ্যাও।