এবার অশোক লাহিড়ীর কথায় বাড়ল জল্পনা। খানিক সমস্যাতেও বিজেপি। বাংলার উন্নয়নের স্বার্থে তিনি প্রয়োজনে গোপনে রাজ্য সরকারকে পরামর্শ দিতেও প্রস্তুত, এমনই দাবি করলেন বিজেপি বিধায়ক এবং অর্থনীতিবিদ অশোক। বালুরঘাটের বিধায়ক অবশ্য একই সঙ্গে দাবি করেছেন, দল বদলের কোনও ইচ্ছে তাঁর নেই৷ রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে রাজ্যের উন্নয়নে অবদান রাখতেই রাজ্য সরকারকে এমন প্রস্তাব দিচ্ছেন তিনি৷ বিজেপি বিধায়ক এই প্রস্তাব দিলেও দল তাতে সায় দেবে কি না, তা নিয়ে অবশ্য প্রশ্ন থাকছেই৷
উল্লেখ্য, বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি-র প্রার্থী তালিকায় অশোক লাহিড়ীর নাম ছিল অন্যতম চমক৷ অনেকেই ধরে নিয়েছিলেন যে বিজেপি সরকার গঠন করলে অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পাবেন এই ভারত সরকারের এই প্রাক্তন মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টা৷ বিজেপি সরকার গঠনে ব্যর্থ হলেও নির্বাচনে জয়ী হয়ে বিধায়ক হন অশোক লাহিড়ি৷ বিধানসভায় পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবেও তাঁর নাম প্রস্তাব করেছিল বিজেপি৷ শেষ পর্যন্ত অবশ্য মুকুল রায়কে পিএসি চেয়ারম্যান করা হয়৷ এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি অশোক লাহিড়ি বলেন, “রাজ্যের উন্নয়নে সরকার যদি কোন পরামর্শ চায়, গোপনেও তা আমি সরকারকে দিতে চাই।”
এরপর স্বভাবতই প্রশ্ন ওঠে, কেন সরকারকে গোপনে পরামর্শ দেওয়ার কথা বলছেন বিজেপি বিধায়ক৷ জবাবে অশোক লাহিড়ী দাবি করেন, ক্যাগ রিপোর্টের মতো সরকারের কাজের বিভিন্ন তথ্য জনসমক্ষে আসে৷ তা নিয়ে সমালোচনাও করা হয়৷ কিন্তু প্রতিটি সরকার পরিচালনার ক্ষেত্রেই গোপন কিছু বিষয় থাকে৷ ফলে অর্থনীতি সংক্রান্ত সেরকম কোনও বিষয়ে যদি সরকার তাঁর পরামর্শ নেয়, তাহলে সরকারের মনোভাবকে সম্মান দিয়ে তিনি সেই বিষয়টি গোপনই রাখবেন বলে জানিয়েছে অশোক লাহিড়ী৷
যদি বিজেপি বিধায়কের এমন প্রস্তাবে তাঁর দল বদলের জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে৷ অশোক লাহিড়ী অবশ্য জোরের সঙ্গে দাবি করেছেন, দল বদলের কোনও ইচ্ছে তাঁর নেই৷আগামী পাঁচ বছর বিজেপির হয়েই বিধায়ক থাকবেন তিনি৷ দল বদলের জল্পনা উড়িয়ে বালুরঘাটের বিধায়ক বলেন, “আমি আয়ারাম গয়ারামের রাজনীতি করতে আসিনি৷ আমি মুকুল নই যে এত তাড়াতাড়ি ঝরে যাবো৷” উল্লেখ্য, অমিত মিত্র শারীরিক অসুস্থতার কারণে অব্যাহতি চাওয়ায় বর্তমানে অর্থমন্ত্রকের দেখভাল করতে হচ্ছে মুখ্যমন্ত্রীকেই৷ ফলে মমতার মন্ত্রিসভায় এখন সে অর্থ কোনও অর্থমন্ত্রী নেই৷ এই পরিস্থিতিতে অশোক লাহিড়ীর রাজ্য সরকারকে পরামর্শ দেওয়ার প্রস্তাবে অনেকেই রাজনৈতিক কোণ খুঁজে পাচ্ছেন। প্রসঙ্গত, শুধু বিজেপিই নয়, শাসক শিবিরও অশোক লাহিড়ীকে যথেষ্ট সম্মানের সঙ্গেই দেখা হয়৷ বিধানসভায় বাজেটের উপরে তিনি বক্তৃতা দেওয়ার সময় যাতে কেউ বাধা না দেয়, মুখ্যমন্ত্রী নিজে সেই নির্দেশ দিয়েছিলেন দলের বিধায়কদের৷