রাজ্যজুড়ে করোনার প্রকোপ কমতেই বিভিন্ন এলাকা থেকে আসছিল মিউকরমাইকোসিস বা ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের খবর। উত্তরবঙ্গে ও পশ্চিম বর্ধমানের কিছু অংশে একের পর এক রোগী হাসপাতালে ভর্তি হতে থাকেন। ব্ল্যাক ফাঙ্গাস রোগীর চিকিৎসায় ইউনিট খোলা হয়েছিল বাঁকুড়া সম্মেলনী কলেজ ও হাসপাতালে। এবার রোগীশূন্য হল সেই ইউনিট। হাসপাতাল সূত্র অনুযায়ী, বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে মিউকরমাইকোসিসের ওই আঞ্চলিক চিকিত্সা কেন্দ্রে গত ৬ মাসে ভর্তি হয়েছিলেন মোট ৫০ জন রোগী। এদের মধ্যে ৭ জনের মৃত্যু হলেও বাকীর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গিয়েছেন। মিউকরমাইকোসিসের চিকিৎসায় এই সাফল্য নজিরবিহীন বলে দাবি করেছে হাসপাতাল।
প্রসঙ্গত, হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, দেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়লে চোখ রাঙাতে শুরু করে মিউকরমাইকোসিস। একের পর এক ব্যক্তির কঠিন এই রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়তেই বিপদের আঁচ পেতে শুরু করে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। এ রাজ্যের এসএসকেএম, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ এই ৩ হাসপাতালকে মিউকরমাইকোসিস চিকিৎসার জন্য আঞ্চলিক কেন্দ্র হিসাবে ঘোষণা করে তৈরি করা হয় পরিকাঠামো।
উল্লেখ্য, বাঁকুড়া জেলা ছাড়াও পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর ও পশ্চিম বর্ধমান জেলা থেকে একের পর এক মিউকরমাইকোসিস রোগী বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হয়। গত এপ্রিল মাস থেকে বিভিন্ন জেলা থেকে এখনো পর্যন্ত মোট পঞ্চাশ জন রোগী এই হাসপাতালে ভর্তি হয়। এই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৭ জনের মৃত্যু হলেও মিউকরমাইকোসিস আক্রান্ত ৪৩ জন রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যান। হাসপাতালের চিকিৎসকদের দাবি সারা দেশ ও বিশ্বে যেখানে মিউকরমাইকোসিসে মৃত্যুর সর্বনিম্ন হার ২০ শতাংশ সেখানে বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে মিউকরমাইকোসিসে মৃত্যুর হার ১৫ শতাংশের নীচে। পুজোর মুখে বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজের মিউকরমাইকোসিস চিকিৎসা কেন্দ্র রোগী শূন্য হয়ে পড়ায় স্বাভাবিক ভাবেই স্বস্তি ফিরেছে চিকিৎসক মহল ও হাসাপাতালে।