রায়গঞ্জের দেবীনগরে শুটআউটের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত দুই বিএসএফ কর্মী। তদন্তে নেমে তাদের চিহ্নিত করেছে রায়গঞ্জ পুলিশ। এছাড়া আরও তিনজন ঘটনার সঙ্গে জড়িত। তবে মূল ৫ অভিযুক্তর প্রত্যেকেই এই মুহূর্তে ফেরার। সোমবার রাতে শহরের মাঝে রাস্তায় শুটআউটের ঘটনায় এক মহিলার মৃত্যুর কিনারা করতে তৎপর পুলিশ।
রাতভর জিজ্ঞাসাবাদের পর মঙ্গলবার সকালের ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে এক মহিলাকে গ্রেপ্তার করেছে রায়গঞ্জ থানা। তার নাম জয়শ্রী দাস। গুলিতে জখম দু’ জনের মধ্যে এক মহিলার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটায়, তাঁকে রায়গঞ্জ থেকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।
সোমবার সন্ধে নাগাদ রায়গঞ্জের জনবহুল দেবীনগর বাজারে প্রকাশ্যে শুটআউট হয়। পুলিশকর্মী সুজয়কৃষ্ণ মজুমদারকে তাঁর বাড়ি থেকে টেনেহিঁচড়ে বের করে গুলি চালায় জনাকয়েক দুষ্কৃতী। ভাইকে বাঁচাতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হন দুই বোনও। তাঁদের মধ্যে একজনের মৃত্যু হয়েছে। সুজয় এবং তাঁর ছোটবোনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে ভরতি করা হয়।
কী কারণে এমন ঘটনা, তার তদন্তে নেমে প্রাথমিকভাবে বেশ কয়েকটি সূত্র আসে পুলিশের হাতে। শুটআউটের ঘটনায় জড়িত দুই বিএসএফ কর্মী-সহ ৫ জন। তাদের মধ্যে একজনের নাম শীতল রায়। মূলচক্রী এই শীতলই। এই মুহূর্তে সে ফেরার। বাড়িতে তালাবন্ধ। পুলিশ সেখানে গিয়ে তদন্তের স্বার্থে বাড়িটি সিল করে দিয়েছে বলে খবর।
প্রাথমিকভাবে তদন্তকারীদের অনুমান, পুলিশকর্মী সুজয়ের বাবা নিখিলকৃষ্ণ মজুমদারও ছিলেন পুলিশ আধিকারিক। তাঁর সঙ্গে বাড়ি ভাড়া নিয়ে কোনও গন্ডগোল ছিল অভিযুক্তদের। সেই রোষ মেটাতে গিয়েই শয্যাশায়ী বাবাকে ছেড়ে ছেলেকে টার্গেট করে গুলি চালায় দুষ্কৃতীরা।
রায়গঞ্জের পুলিশ সুপার সানা আখতার বলছেন, ”শুটআউটের ঘটনায় মূল অভিযুক্তের নাম শীতল রায়। সে বিএসএফ কর্মী। এছাড়া আরেকজন বিএসএফ কর্মীও অভিযুক্ত রয়েছে। সবমিলিয়ে, ৫ জনকে অভিযুক্ত হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এদের সাহায্য করার অভিযোগে এক মহিলাকে জিজ্ঞাসাবাদের পর গ্রেপ্তার করা হয়েছে।”
আবার তদন্তকারীদের একাংশ এর পিছনে অন্য কারণও খুঁজে পাচ্ছেন। ১২ বছর আগে নিখিলকৃষ্ণবাবুর বাড়ির পরিচারিকার সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল বলে জানা গিয়েছে। পরে তা নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়। তার জেরে এই গুলিকাণ্ড কিনা, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।