মোদী সরকার তাঁর রোম সফরের অনুমতি দেয়নি। এই পরিস্থিতিতে কলকাতা থেকেই রোমে শান্তি সম্মেলনে বক্তব্য রাখবেন বলে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ ভাবে কত দিন কেন্দ্র তাঁর বিদেশ সফরের অনুমতি আটকে রাখবে, সেই প্রশ্নও তুলেছেন তৃণমূলনেত্রী।
আগামী নভেম্বর মাসে রোমে একটি সংগঠনের উদ্যোগে হওয়া শান্তি সম্মেলনে মমতা আমন্ত্রিত হলেও শনিবার কেন্দ্র জানিয়ে দেয়, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে এই সম্মেলনে যাওয়ার অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে না। শনিবারই কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেছিলেন মমতা। ভবানীপুরে রবিবার তাঁর শেষ দিনের প্রচারেও এ নিয়ে ফের সরব হয়েছেন তৃণমূলনেত্রী।
তিনি বলেছেন, ‘বাংলায় শান্তি রয়েছে বলেই এই শান্তি সম্মেলনে আমরা ডাক পাই। কিন্তু যাঁরা হিংসুটে, তাঁরা বলেন যাওয়া যাবে না। কোনটা ফিট আর কোনটা ফিট নয়, কে ঠিক করবে? অনেক রাজ্য অনুমোদন নেয় না। বিশ্বশান্তির কথা আমি এখান থেকেই বলছি। না-যেতে দিলেও আমি এখান থেকেই যা বলার বলব। ইতালি সরকারকে কৃতজ্ঞতা জানাই আমাকে যাওয়ার অনুমতি দেওয়ার জন্য।’
বাংলা থেকেই শান্তি সম্মেলনের উদ্দেশে যা বলার বলবেন বলে জানালেও মমতা স্পষ্ট করেননি, তিনি ভার্চুয়ালি এই সম্মেলনে ভাষণ দেবেন নাকি সেখানে কোনও বার্তা পাঠাবেন। এই ধরনের আন্তর্জাতিক মঞ্চে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গেলে তাঁর জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কাতেই তাঁকে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়নি বলে এদিন অভিযোগ করেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, ‘রোমে বিশ্বশান্তি সম্মেলনে বাঙালি ব্রাহ্মণ হিন্দু মহিলা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে যেতে দেওয়া হলো না, পাছে তাঁর জনপ্রিয়তা বেড়ে যায়।’
মমতার রোম সফরে ‘না’ কেন্দ্রের, চিঠি পেল নবান্ন
অতীতে মমতার একাধিক বিদেশ সফর নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছিল। ফের রোম সফরে কেন্দ্র সবুজ সঙ্কেত না-দেওয়ায় ক্ষুব্ধ মমতা এদিন বলেন, ‘বিবেকানন্দের শিকাগো ভাষণের পূর্তি উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠানে আমাকে যেতে দেওয়া হয়নি। কেমব্রিজে ভাষণ দিতে যেতে দেওয়া হয়নি। চিনে একটি অনুষ্ঠানে যেতে দেয়নি। সেন্ট স্টিফেন্স কলেজের অনুষ্ঠানে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিল।
২০১৪ সালে আপনার (মোদীর) আমেরিকা যাওয়া আটকে দিয়েছিল কংগ্রেস, তার পরিণতি কী হয়েছিল সবাই দেখেছে। আপনারও একই পরিণতি হবে।’ মমতাকে রোম সফরের অনুমতি না-দেওয়ার কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন বিজেপি সাংসদ সুব্রহ্মণ্যম স্বামীও। তিনি এদিন টুইটে লিখেছেন, ‘কেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীকে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশগ্রহণ করতে বাধা দেওয়া হলো? কোন আইনে তাঁর যাওয়া আটকে দেওয়া হলো?’
এই ভাবে কত দিন বন্ধ করবে? একদিন ঝুড়ি থেকে সব লাড্ডু পড়ে যাবে, শুধু ঝুড়ি থেকে যাবে!’ এই ‘লাড্ডু’র কথা বলে মমতা আদতে নরেন্দ্র মোদীকে কটাক্ষ করলেন বলে মনে করছেন তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশ। মমতাকে রোম সফরে যেতে না-দিয়ে মোদী সরকার বড় ভুল করেছে বলে মন্তব্য করেছেন অভিষেকও। তিনি বলেন, ‘নরেন্দ্র মোদী সেই ভুল করলেন, যা কংগ্রেস করেছিল।