করোনা আবহে দেশজুড়ে সংকটের মুখে মানুষের জীবন জীবিকা। রোজ দু’বেলা দু’মুঠো ভাত জোগাড় করতে নাজেহাল বহু সাধারণ মানুষ। বাংলায় সেইসব মানুষের জন্য চালু করা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রকল্প ‘মা ক্যান্টিন’ সকলেরই প্রশংসা আদায় করে নিয়েছে। মানুষ যে এই পরিষেবায় আস্থা রাখছে, তা বোঝা যাচ্ছে রাজ্যজুড়ে চালু হওয়া ক্যান্টিনগুলিতে বাড়তে থাকা ভিড়ের দিকে তাকালেই। গত বিধানসভা ভোটের সময় নানা বিধিনিষেধের কারণে কিছুটা থমকে গিয়েছিল এই প্রকল্পটি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৃতীয়বারের জন্য সরকার গড়ার পরে এটি রূপায়ণে ফের উদ্যোগী হন। গত জুন মাসে বনগাঁ পুরসভার ব্যবস্থাপনায় শহরে চালু হয় মা ক্যান্টিন। সেখানে রোজ পাঁচ টাকার বিনিময়ে ভাত-ডাল-সব্জি-ডিমের বন্দোবস্ত করা হয়। বনগাঁ নিরঞ্জন সাহা মার্কেটের দোতলায় এই মা ক্যান্টিন চালু হয়েছে। দুপুর ১টা থেকে ৩টে পর্যন্ত সেখানেই মিলছে খাবার। রোজ সেখানে প্রায় ৬০০ জন মানুষ পাঁচ টাকার বিনিময়ে পাচ্ছেন পেটভরে দুপুরের আহার। সকাল ১১টা থেকে কুপন দেওয়া শুরু হয়। দিনদিন এখানেও বাড়ছে খাবার খেতে আসা মানুষের সংখ্যা।
উল্লেখ্য, বনগাঁ পুরসভার মহিলারা এই মা ক্যান্টিন পরিচালনার দায়িত্বে। এটি চালু হওয়ায় দিনমজুর ও অটো-টোটো চালকরা খুব উপকৃত হয়েছেন। জনৈক অটোচালক এক্রাবুল মণ্ডল বলেন, “মাত্র পাঁচ টাকায় পেট ভরে দুপুরের খাবার পাওয়া যাবে, এটা আগে কখনও ভাবিনি। খুবই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ক্যান্টিন। অপর এক অটোচালক বাপ্পা মণ্ডল বলেন, অনেকের মুখে শুনে প্রথমে তো বিশ্বাস হচ্ছিল না পাঁচ টাকায় কী করে ডিম, ডাল, সব্জি, ভাত হতে পারে। একদিন দুপুরের খাবার খেয়ে অবাক হয়ে গিয়েছি।” গ্রাম থেকে আসা রাজমিস্ত্রির জোগারে বিক্রম ঘোষ বলেন, “পাঁচ টাকায় এক কাপ চা-ও এখন মেলে না। সেখানে পেট ভরে দুপুরের খাবার। আমাদের দিদি আছে বলেই সম্ভব।” বনগাঁ পুরসভার প্রশাসক গোপাল শেঠ বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুপ্রেরণায় পুরসভার ব্যবস্থাপনায় মা ক্যান্টিন চালু হয়েছে। আমরা সবসময় চেষ্টা করছি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নভাবে মানুষের মুখে অন্ন তুলে দিতে।”