আর মাত্র তিন দিন। তারপরই ভবানীপুরে উপনির্বাচনের লড়াই। তার আগেই শেষ রবিবার প্রচারে কার্যত ঝড় তুললেন তৃণমূল সুপ্রিমো তথা ভবানীপুরের প্রার্থী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপিকে লক্ষ্য করে বারবার আক্রমণ জানালেন। অসমে পুলিশের নির্বিচার গুলিতে ২ জনের মৃত্যুর ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে মমতা বললেন, “বিজেপি তো ডান্সিং ড্রাগন। অসমে মৃতদেহ উপর উঠে নাচছে। এটা কোনও রাজনৈতিক দলের কাজ? নাকি তাদের শোভা পায়?” তাঁর রোম সফর বাতিল হওয়ায় ফের কেন্দ্রীয় সরকারকে একহাত নিলেন মমতা। সিপিএম, কংগ্রেসকে নিয়েও জনতার কাছে বার্তা দিলেন। বললেন, “৪০-৫০% এর বেশি ভোট হয় না এখানে, সেটাই দেখে আসছি। কিন্তু এবার সকলে ভোট দিন। বিজেপি-কংগ্রেস-সিপিএম জগাই-মাধাই-গদাই। এই কদিন অনেক কিছু করবে। মাথা ঠাণ্ডা রাখুন, ভোটটা দিন।”
রবিবারের বৃষ্টিভেজা দিন এই সভার আয়োজনে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি। নির্দিষ্ট সময় অভিষেক-মমতা মঞ্চে উপস্থিত হন। অভিষেকের বক্তব্যের পরই বলতে ওঠেন মমতা। শুরুতে তিনি ভবানীপুরবাসীকে অভিনন্দন জানিয়ে বক্তব্য শুরু করেন। ভবানীপুরকে মিনি ভারতবর্ষের সঙ্গে তুলনা করে তিনি বলেন, “ভবানীপুর ছোটখাটো ভারতবর্ষ। এখানে হিন্দু, শিখ, জৈন, পারসিক, খ্রিস্টান – সবধর্মের মানুষ মিলেমিশে বসবাস করেন। আর এখান থেকেই নতুন লড়াই শুরু হচ্ছে। এবার গোটা ভারতবর্ষের প্রতিটি কোণায় কোণায় পৌঁছে যাব।”
এই কথার পরই বিজেপি তীব্র নিন্দা করেন মমতা। প্রথমেই এ প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন ত্রিপুরায় ১৪৪ ধারা জারি এবং মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবের কথা। বলেন, “ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, কোর্ট কী করবে? এহেন মন্তব্যের জন্য ডিফেমেশন কেস করতে পারে তাঁর বিরুদ্ধে। আমার কাছে এই ভিডিও এসেছে, আমি আপনাদের দেব। ১৪৪ ধারা দিয়ে অভিষেককে আটকাচ্ছে। আর এখানে বহিরাগতরা এসে উসকাচ্ছে।” নিজের রোম সফরে বিদেশমন্ত্রকের আপত্তির কথা তুলে মমতা বক্তব্য, “সব সম্প্রদায়ের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক। সেই সম্পর্ক যেন টিকে থাকে। বাংলাকে তাই শান্তি সম্মেলনে ডাকে। আর বলে দেওয়া হয় যাওয়া যাবে না, আনফিট। কে বলে দেবে আনফিট না ফিট?” উল্লেখ্য, এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাষণের মাঝেই মঞ্চে হাজির হন সংগীতশিল্পী নচিকেতা চক্রবর্তী। তাঁকে সাদরে অভ্যর্থনা জানিয়ে গান শোনানোর আবদার করেন মমতা। বলেন, “ও এখানে এসেছে, আমি খুব খুশি। আবার এই সভা থেকে ও কালীঘাটেও যাবে। তবে একটা গান শুনিয়ে যাবে। ওর গান আমার খুব ভাল লাগে।”