শিকাগোর পর এবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রোম সফরের অনুমতি দিল না কেন্দ্র। রোম সফরের অনুমতি না দিয়ে বিদেশমন্ত্রক এক লাইনের চিঠিতে জানিয়েছে, এই অনুষ্ঠানটি মুখ্যমন্ত্রী পদের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। বিদেশমন্ত্রকের এই চিঠিটি নবান্নে এসেছে শুক্রবার মধ্যরাতে। কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তে স্বাভাবিক ভাবেই ক্ষুব্ধ নবান্ন। এই ঘটনাকে রাজনৈতিক হিংসা হিসেবেই দেখছে রাজ্য সরকার। রোম সফর বাতিল হওয়া নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিন নরেন্দ্র মোদী সরকারের এই সিদ্ধান্তকে ঈর্ষার কারণ বলেই ব্যাখ্যা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর দাবি, ‘জার্মান চ্যান্সেলর ছিলেন। পোপ ছিলেন। বিশ্বশান্তির জন্য রোমে এই মিটিং ডাকা হয়েছে। দু’মাস আগে ওঁরা যোগাযোগ করেছিল। আমাকে বিশেষ ভাবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। আজ কেন্দ্র থেকে চিঠি পাঠিয়ে দিয়েছে। এটা পলিটিক্যাল।’ বিদেশমন্ত্রকের এই চিঠিতে অত্যন্ত অপমানিত হয়েছেন বলেও জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, ‘আমাকে কেন প্রতিনিধিত্ব কেন থেকে বাদ দিলেন? সিএমের জন্য যাওয়া ঠিক নয়? যেখানেই যেতে চাইছি বারণ করে দিচ্ছে। না যেতে দিয়ে খুব অপমান করেছেন। সব ধর্মের লোক সেখানে থাকবেন।’
মোদি সরকারের এই সিদ্ধান্তকে দেশের অপমান বলেও দাবি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেছেন, ‘যখন দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করার জায়গা এসেছিল, তখন দেশের অপমান করলেন। আমার বিদেশভ্রমণের কোনও ইচ্ছে নেই। আসলে, হিংসেতে ওরা জ্বলছে। পুরো হিংসা।’ প্রসঙ্গত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই মুহূর্তে মার্কিন সফরে রয়েছেন। এরই মধ্যে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর রোম সফর বাতিল নিয়ে চিঠির ঘটনাকে বেশ গুরুত্ব দিয়েই দেখছে রাজনৈতিক মহল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইউরোপ সফরে গিয়ে কী বলেন, তা শুনতে মুখিয়েই ছিলেন রাজ্যবাসী। কিন্তু সেই সফরই বাতিল করে দিল কেন্দ্র। যুক্তিতে যে অসামঞ্জস্যের কথা আছে, তাকে ব্যখ্যা করারও দায় কেন্দ্র নেয়নি।
অক্টোবরের ৬ এবং ৭ তারিখে রোমে ওই কর্মসূচি হওয়ার কথা। ইতালির একটি বেসরকারি সংগঠন ওই কর্মসূচির উদ্যোক্তা। তারা জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মের্কেল, পোপ এবং ইটালির শীর্ষ রাজনৈতিক নেতৃত্বকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে। তাঁদের সঙ্গেই আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল বাংলা মুখ্যমন্ত্রী মমতাকেও। মমতা সেই আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছিলেন। সেই মতো তাঁর সফরসূচিও চূড়ান্ত করা হয়ে গিয়েছিল। ঠিক ছিল, ভবানীপুরের উপনির্বাচনের পর তিনি রোম সফরে যাবেন। সেই মতো প্রস্তুতিও নিচ্ছিলেন মমতা। তখনই আচমকা এই চিঠি।