এদিন মোট গ্রামের ৭০ থেকে ৭৫টি ঘর ভেঙেছে। কয়েক সেকেন্ডেই তছনছ হয়ে গিয়েছে সব। বড় বড় গাছ ভেঙে গিয়েছে। গাছ পড়ে রাস্তা আটকে গিয়েছে। এখন নিজেরাই সেসব সরানোর বন্দোবস্ত করছেন তাঁরা।
কয়েক সেকেন্ডের ঘূর্ণিঝড়ে তছনছ খড়গপুরের আম্বা। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার খড়গপুর লোকাল থানার অন্তর্গত পূর্ব আম্বা গ্রামে। নিম্নচাপের কারণে কিছুদিন থেকেই শুরু হয়েছে বৃষ্টি। আর সেই বৃষ্টির সঙ্গে সঙ্গে গতকাল রাতে পূর্ব আম্বা গ্রামে তছনছ বাড়ির পর বাড়ি।
হঠাৎ করেই মঙ্গলবার রাতে ঘূর্ণিঝড়ে এলাকা তছনছ করেছে বলে দাবি এলাকাবাসীদের। গতকাল রাতে হঠাৎ করে কয়েক সেকেন্ডের ঘূর্ণিঝড় হয়। ঘূর্ণিঝড়ে প্রায় ৭০-৭৫টি বাড়ির ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি এলাকাবাসীর। ঝড়ে বেশকিছু বাড়ির উপর গাছ পড়ে গিয়ে অ্য়াসবেস্টার ও বাড়ির দেয়াল ভেঙে যায়। ঘূর্ণিঝড়ে বেশ কিছু মাটির বাড়ির খড়ের চাল উড়ে যায়।
এক এলাকাবাসীর কথায়, রাত তিনটে নাগাদ আচমকা দমকা হাওয়া দেয়। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই ঘরবাড়ি-গাছপালা একের এক ভেঙে পড়তে থাকে। এখন থাকারই জায়গা নেই। গাছতলায় যে আশ্রয় নেবেন সেটাও নেই বলে মন্তব্য এক বৃদ্ধার।
যশোদা নায়েক নামে আরেক মহিলার কথায়, ঘুমের মধ্যে হঠাৎ সোঁ-সোঁ শব্দ শুনে উঠে পড়ি। তার পর ভেঙে পড়ে বাড়ির চাল। ছেলেমেয়ে নিয়ে এখন কোথায় যাব, সেটাই ভাবছি। এখন ত্রিপল ঢাকা দিয়ে কোনও রকম থাকতে হবে। কিন্তু তারই ব্যবস্থা করতে পারছি না। স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, এদিন মোট গ্রামের ৭০ থেকে ৭৫টি ঘর ভেঙেছে। কয়েক সেকেন্ডেই তছনছ হয়ে গিয়েছে সব। বড় বড় গাছ ভেঙে গিয়েছে। গাছ পড়ে রাস্তা আটকে গিয়েছে। এখন নিজেরাই সেসব সরানোর বন্দোবস্ত করছেন তাঁরা।
ফসলের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কায় ঘুম উড়েছে চাষিদের। কাঁচা রাস্তা, মাটির বাঁধেরও প্রবল ক্ষতি হচ্ছে গ্রামগুলিতে। তবে কলকাতা, হাওড়া, হুগলি মুর্শিদাবাদ এই সমস্ত জেলায় বৃষ্টির পরিমাণ কম হবে। তবে বজ্রগর্ভ মেঘ সঞ্চার করে বৃষ্টি হবে হালকা থেকে মাঝারি। আগামী ২৪ ঘন্টায় আবহাওয়ার খুব একটা বেশি পরিবর্তন হবে না বলে জানিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর।
এদিকে হাওয়া অফিস জানাচ্ছে, আজও দক্ষিণবঙ্গের ৬ জেলায় ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। বুধবার মুষলধারে বৃষ্টি হবে দুই ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া ও ঝাড়গ্রামে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে হওয়া ঘূর্ণাবর্ত এবং মৌসুমী অক্ষরেখা প্রবলভাবে সক্রিয়। আর সেই কারণেই আজ এই জেলাগুলিতে ভারী বৃষ্টি হবে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে নদী প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা থাকছে। এমনিতেই জেলাগুলিতে চাষের জমি জলের তলায়।