ত্রিপুরায় নিরাপদ নন সরকারি আধিকারিকরা। বেশ কয়েকদিন ধরে একের পর এক হামলার ঘটনা ঘটেছে সরকারি আধিকারিকদের উপরে। যার জেরে ভীষণ রকম উদ্বিগ্ন সরকারি আধিকারিকরা। তাই জেলাশাসকরা চিঠি লিখেছেন পুলিশ সুপারদের কাছে৷ মাঠে ময়দানে কাজ করতে গিয়ে যাতে নিরাপত্তার অভাব না থাকে, সেই বিষয়েই চিঠি দিয়ে আবেদন জানানো হয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে শাসক দলের নেতা-কর্মীদের হাতে সরকারি আধিকারিকদের নিগৃহীত হয়ে নিরাপত্তা চাওয়ার এমন নজির দেশে নেই বলেই মনে করছেন রাজনীতিবিদরা। গত ১৫ সেপ্টেম্বর ত্রিপুরার দক্ষিণ জেলায় সাব্রুমে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার কাজ করতে গিয়ে আক্রান্ত হন এক সরকারি আধিকারিক। অভিযোগ শাসক দলের মদতপুষ্ট ব্যক্তিরাই আক্রমণ চালিয়েছেন। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌছয় যে, ত্রিপুরার মুখ্যসচিব কুমার অলক টুইট করে গোটা ঘটনার নিন্দা করেন৷ গ্রেফতার করতে নির্দেশ দেন পুলিশ আধিকারিককে। তার পরেই গ্রেফতার হন ৫ জন।
যদিও বিজেপি অভিযোগ অস্বীকার করেছে। মুখ্যমন্ত্রী নিজেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন৷ ফলে বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্যরা প্রশ্ন তুলেছেন তাঁর কাজ নিয়েই। ইতিমধ্যেই নিরাপত্তা চেয়ে চিঠি দিয়েছেন সিপাহীজলার জেলাশাসক বিশ্বশ্রী বি। চিঠি দিয়েছেন উনকোটির জেলাশাসক। তিনি আবার চিঠিতে সাব্রুমের পোয়াংবাড়িতে সরকারি আধিকারিকের আক্রান্তের কথা উল্লেখ করে দিয়েছেন। সরকারি আধিকারিকদের নিরাপত্তা চেয়ে চিঠি দেওয়া নিয়ে বিপ্লব দেবকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি বিরোধী সব রাজনৈতিক দল। তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ জানিয়েছেন, ‘রাজ্যের এমন অবস্থা যেখানে মুখ্যসচিবকে টুইট করে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে বলা হচ্ছে। সরকার তার আধিকারিকদের নিরাপত্তা দিতে পারছে না। সরকারি আধিকারিকরা অসহায় হয়ে পড়েছেন।
তৃণমূলের অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রী আইন শৃঙ্খলা নিয়ে যা যা বলে চলেছেন তা মিথ্যা। এই ভাবে সরকারি আধিকারিকরা আক্রান্ত হওয়ায় সেটা আরও একবার প্রমাণিত। বাম নেতা জিতেন্দ্র চৌধুরীর অভিযোগ, ‘বিরোধী রাজনৈতিক দল আক্রান্ত হচ্ছে। সংবাদমাধ্যম আক্রান্ত হচ্ছে। এবার সরকারি আধিকারিকরাও আক্রান্ত হচ্ছেন। বিরোধীরা নিরাপত্তাহীনতার কথা বলত। এবার প্রশাসনের অন্দরেও সেই কথা ঘুরে বেড়াচ্ছে’। বিজেপি অবশ্য বিরোধীদের এই সব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। বিজেপি নেতা নব্যেন্দু ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, ‘বিজেপির কেউই এই সব ঘটনার সাথে জড়িত নয়৷ প্রশাসন দুষ্কৃতীদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার করেছে। বাম আমলে মহকুমা অফিসে মহকুমাশাসককে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল। রাজ্য বাসিন্দাদের সমস্ত ধরণের নিরাপত্তা দিতে প্রস্তুত ও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ’। মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব অবশ্য এই ঘটনা নিয়ে এখনও মুখ খোলেননি৷ সূত্রের খবর, দলকে তিনি নির্দেশ দিয়েছেন কর্মীদের সংযত রাখার জন্যে।