আমেরিকান সেনাবাহিনী সরে যেতেই রীতিমতো তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে আফগান ফৌজ। কার্যত বিনা যুদ্ধেই, আগস্টের ১৫ তারিখ কাবুল দখল করে তালিবান। তার কিছুক্ষণ আগেই হেলিকপ্টারে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান আশরফ গনি। আর সেই কথা তুলে ধরে প্রাক্তন প্রেসিডেন্টের ঘাড়েই সমূহ দোষারোপ করে আফগান বিপর্যয়ের লজ্জা নিবারণে ব্যস্ত মার্কিন মুলুক। বৃহস্পতিবার আফগানিস্তানে নিযুক্ত বিশেষ মার্কিন দূত তথা দোহা শান্তি আলোচনার অন্যতম কাণ্ডারী জালমে খলিলজাদ স্পষ্ট ভাষায় বলেন যে, আশরফ গনি কাবুল ছেড়ে না পালালে শেষ মুহূর্তে আফগান সমস্যার রাজনৈতিক সমাধান হয়ে যেত। ‘ফিনান্সিয়াল টাইমস’-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে খলিলজাদ জানিয়েছেন, পরিকল্পনা ছিল যে আফগানিস্তানে ক্ষমতা ভাগ নিয়ে রাজনৈতিক সমাধান না মেলা পর্যন্ত তালিবানকে কাবুলে ঢুকতে না দেওয়া। সেই উদ্দেশে কাতারে আমেরিকা ও তালিবানের মধ্যে আলোচনাও চলছিল। কিন্তু গনি কাবুল ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া মাত্র সরকারি বাহিনী অস্ত্র ফেলে দেয়। ফলে রাজধানীতে ক্ষমতার শূন্যস্থান তৈরি হয়। আর সেই সুযোগেই কাবুলে ঢুকে পড়ে তালিবান।
যদিও খলিলজাদের যুক্তি মানতে নারাজ আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকদের একাংশ। তাঁদের মতে, কাতারের শান্তি আলোচনার নামে আগেই তালিবানের কাছে আফগানিস্তান তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। সেই একই পথে হেঁটেছেন তাঁর উত্তরসূরী জো বাইডেন। আর মার্কিন ফৌজ সরে গেলে তালিবানকে রুখে দেওয়ার মতো সৈন্যশক্তি আফগানিস্তানে ছিল না। ফলে সব জেনেই আমেরিকা সেনা প্রত্যাহার করেছিল। আর ঘরে বাইরে সমালোচনার জেরে লজ্জা নিবারণের খাতিরে এবার সমস্ত দোষ আশরফ গনির ঘাড়ে চাপানো হচ্ছে। উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগেই দেশ ছাড়া নিয়ে আত্মপক্ষ সমর্থনে বয়ান জারি করেছিলেন আশরফ গনি। তাঁর দাবি, সংঘর্ষ এড়াতে ও কাবুলের মানুষের প্রাণ বাঁচাতেই তিনি দেশ ছেড়েছিলেন। ১৫ই আগস্ট কাবুল দখল করে তালিবান। সেই দিনই হেলিকপ্টারে দেশ ছাড়েন গনি। বর্তমানে সংযুক্ত আরব অমিরশাহীতে রয়েছেন তিনি।