দেশে ২০১৯ এর চেয়ে ২০২০ সালে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ৯৬ শতাংশ বেড়েছে। গত বছর লকডাউনের মধ্যে মহিলা, শিশুদের ওপর নির্যাতনের মতো প্রচলিত অপরাধ কমলেও জনজীবনে সংঘাত বেড়েছে বলে জানিয়েছে জাতীয় অপরাধ রেকর্ডস ব্যুরো (এনসিআরবি)। তাদের ক্রাইম ইন ইন্ডিয়া শিরোনামে প্রকাশিত রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, আগের বছরের চেয়ে সাম্প্রদায়িক হিংসা বৃদ্ধির পাশাপাশি ২০২০তে জাতিদাঙ্গা বেড়েছে প্রায় ৫০ শতাংশ, কৃষিসংক্রান্ত সংঘর্ষ ৩৮ শতাংশ ও আন্দোলন, বিক্ষোভের জেরে দাঙ্গা ৩৩ শতাংশ বেড়েছে।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, গত বছরের ২৫ মার্চ থেকে ৩১ মে পর্যন্ত দেশব্যাপী বহাল থাকা সম্পূর্ণ লকডাউনে মহিলা, শিশু, প্রবীণ নাগরিকদের ওপর নির্যাতন, চুরি, ডাকাতি, রাহাজানির মতো অপরাধ সংক্রান্ত দায়ের হওয়া মামলা কমেছে প্রায় ২ লাখ। খুন বেড়েছে সামান্য ১ শতাংশ। ‘হিংস্র অপরাধ’ কমেছে ০.৫ শতাংশ। রাষ্ট্রবিরোধী অপরাধ ২০১৯ এর চেয়ে গত বছর কমেছে ২৭ শতাংশের ওপর। তবে এই মাপকাঠিতে ব্যতিক্রম উত্তরপ্রদেশ। সেখানে এই জাতীয় অপরাধ বেড়েছে।
মূলতঃ সরকারের দায়ের করা প্রচুর সংখ্যায় সরকারি সম্পত্তি ক্ষতি করার মামলার জেরে। এগুলির বেশিরভাগই হয়েছে সিএএ-বিরোধী বিক্ষোভের সময়।
এনসিআরবির পরিসংখ্যান হল, ২০১৯ এ দেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার মামলা দায়ের হয়েছিল ৪৩৮টি। ২০২০তে তা বেড়ে হয় ৮৫৭টি। গত বছরের মামলাগুলির বেশিরভাগই ফেব্রুয়ারির উত্তরপূর্ব দিল্লীর দাঙ্গা ঘিরে। দিল্লী পুলিশ একাই ৫২০টি সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার মামলা করে। বিহার, হরিয়ানা, ঝাড়খন্ডে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার মামলা ছিল যথাক্রমে ১১৭, ৫১টি, মহারাষ্ট্রে সংখ্যাটি ২৬, গুজরাতে ২৩টি।
অন্যদিকে, ২০২০তে জাতপাতকেন্দ্রিক সংঘর্ষও বেড়েছে। ২০১৯ এ দায়ের হয় ৪৯২টি মামলা, গত বছর ৭৩৬টি। বিহারে সংখ্যাটা সবচেয়ে বেশি। ২০৮। মহারাষ্ট্রে ১২৫, উত্তরপ্রদেশে ১১৬টি, কর্ণাটকে ৯৫টি, তামিলনাড়ুতে ৬৯টি। এনসিআরবির পরিসংখ্যানে পুলিশের দায়ের করা মামলার সংখ্যাই থাকে। ফলে কর্মক্ষেত্রে হাজির পুলিশ কর্মীরা কতটা সাড়া দিচ্ছেন, তারও একটা ছবি ফুটে ওঠে। গত বছর তিনটি কৃষি আইনের বিরুদ্ধেও অভূতপূর্ব প্রতিবাদে নামেন কৃষকরা। যার জেরে কৃষি বিক্ষোভের জেরে সংঘর্ষ বেড়েছে। ২০১৯ এ সংখ্যাটা ছিল ১৫৭৯। ২০২০তে তা বেড়ে হয়েছে ২১৮৮টি।