ত্রিপুরায় সিপিএম তথা বাম নেতা-কর্মীদের উপর ‘হামলা’র ঘটনায় খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লেখা হলেও এখনও পর্যন্ত তার প্রাপ্তিস্বীকারই করেনি প্রধানমন্ত্রীর দফতর। অভিযোগ সিপিএমের।
নয়াদিল্লীর এ কে গোপালন ভবনে ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারকে পাশে বসিয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলনে সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি বলেন, ‘আজকালের মধ্যেই আমরা রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চেয়েছিলাম। তিনদিন আগে সাক্ষাতের সময় চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে রাষ্ট্রপতি ভবনে। কিন্তু এখনও কোনও জবাবই আসেনি। হ্যাঁ অথবা না’ও আমাদের জানানো হয়নি।’
ইয়েচুরির অভিযোগ, ‘আমি নিজে ত্রিপুরার ঘটনা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছিলাম। তাঁর হস্তক্ষেপ দাবি করেছিলাম। কিন্তু হস্তক্ষেপ পরের কথা, চিঠির প্রাপ্তিস্বীকারই করা হয়নি।’ রাজনৈতিকভাবে যা তাৎপর্যপূর্ণ, তা হল ত্রিপুরা নিয়ে বিজেপি-বিরোধী সুর চড়াতে গিয়ে একপ্রকার তৃণমূলের পাশেই দাঁড়াচ্ছে সিপিএম।
এদিন মানিকবাবু বলেন, ‘তৃণমূল গত দু’আড়াই মাস ধরে ত্রিপুরায় আসছে। ওদের উপর হামলার ঘটনারও কড়া নিন্দা করেছি আমরা। এটা ত্রিপুরার সংস্কৃতি নয়।’ রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, বিজেপির আক্রমণ থেকে রেহাই পাচ্ছেন না কংগ্রেস কর্মীরাও। তবে বিজেপিকে হারাতে কংগ্রেস এবং তৃণমূলের সঙ্গে তাঁরা হাত মেলাবেন কি না, সেই প্রশ্নের নির্দিষ্ট কোনও জবাব দেননি মানিকবাবু। বলেছেন, ‘এখন এসব আমাদের মাথাতেই নেই। সিপিএম শুধুমাত্র ভোট-রাজনীতি করে না। রাজ্যে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠাই আমাদের একমাত্র লক্ষ্য।’
সিপিএমের অভিযোগ, রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বিরোধীদের উপর নজিরবিহীন আক্রমণ করছে বিজেপি। ২০১৮ সালের মার্চ থেকে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত সিপিএম সদস্য ও সমর্থকদের তিন হাজারেরও বেশি বাড়িতে আগুন লাগানো হয়েছে। ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনাও প্রতিনিয়ত ঘটছে। দলের ছ’শোরও বেশি দলীয় কার্যালয়ে হামলা চালানো হয়েছে। গত ৭ এবং ৮ সেপ্টেম্বর রাজ্যজুড়ে কীভাবে হামলা চালিয়েছে বিজেপি আশ্রিত গুণ্ডারা, তার পরিসংখ্যানও পেশ করেছে সিপিএম।