আদালতের নজরদারিতে পেগাসাস কাণ্ডের তদন্তের দাবিতে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের হয়েছিল। দেশের প্রধান বিচারপতি এনভি রমনের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে সেই মামলার শুনানি চলছে। কিন্তু এখনও স্পষ্ট নয়, মোদী সরকার আড়ি পেতেছে না পাতেনি।
কেন্দ্র বলছে, ব্যাপারটা অতি গোপনীয়। জাতীয় নিরাপত্তার সঙ্গে যুক্ত। সবাই জেনে ফেললে দেশের ক্ষতি। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট অত সহজে সরকারি কৌঁসুলির কথা মানছে না। সোমবার প্রধান বিচারপতি রমনের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ সাফ বলেছে, সরকার হলফনামা দিয়ে জানাক, কারও ফোনে আড়ি পাতা হয়েছিল কিনা। হলফনামা জমা দেওয়ার জন্য বেশি সময় নিলে চলবে না।
বিচারপতিদের স্পষ্ট কথা, যা জানানোর, জানাতে হবে তিনদিনের মধ্যে। নাহলে সুপ্রিম কোর্টই গঠন করবে স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম। তারা তদন্ত করে দেখবে, সত্যিই পেগাসাস সফটওয়ার ব্যবহার করে বিচারক, সাংবাদিক, রাজনীতিক, সমাজকর্মী এবং অপর কারও ফোনে আড়ি পাতা হয়েছিল কিনা। পুরো তদন্ত মনিটর করবে কোর্ট।
প্রসঙ্গত, গত ১৮ জুলাই পেগাসাস কেলেঙ্কারির কথা জানাজানি হয়। প্যারিসের সংবাদমাধ্যম ফরবিডেন মিডিয়ার সঙ্গে যৌথভাবে তদন্ত চালিয়েছিল অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, ওয়াশিংটন পোস্ট, দি গার্ডিয়ান, লা মন্ডে ও দি ওয়ারের মতো কয়েকটি সংস্থা। তারা জানতে পারে, ২০১৬ থেকে ২০২১ সালের জুনের মধ্যে পেগাসাস স্পাইওয়ার ব্যবহার করে বিশ্ব জুড়ে প্রায় ৫০ হাজার মানুষের ফোনে আড়ি পাতা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ৩০০ জন ভারতীয়।
উল্লেখ্য, পেগাসাস স্পাইওয়্যার বানায় ইজরায়েলের এনএসও নামে এক সংস্থা। তারা কেবল কোনও দেশের সরকারকেই ওই স্পাইওয়ার বিক্রি করে। সঙ্গত কারণেই প্রশ্ন ওঠে, ভারতে তাহলে কি মোদী সরকারই পেগাসাসের মাধ্যমে আড়ি পাতছিল? নাকি বিদেশি কোনও সরকার পেগাসাসের মাধ্যমে এদেশের বিশিষ্ট জনেদের ওপরে নজর রাখছে।
বিরোধীরা একবাক্যে বলছেন, আড়ি পেতেছেন মোদীই। এই নিয়ে মামলাও হয়েছে। আদালত সরকারকে জানাতে বলছে, সত্যিই কি আড়ি পাতা হয়েছিল? কিন্তু সোমবার সলিসিটর জেনারেল দু’ঘণ্টা ধরে বোঝাতে চেষ্টা করছিলেন, ব্যাপারটা খুব স্পর্শকাতর। এর সঙ্গে জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়টি জড়িত। তা প্রকাশ্যে জানানো উচিত নয়। তবে বিচারপতিরা স্পষ্ট বলেছেন, সরকার যদি এ ব্যাপারে তদন্ত না করায়, আদালতই করাবে।