করোনার হানায় যখন ত্রস্ত গোটা দেশ। পুরোদমে মারণ ভাইরাসের তৃতীয় ঢেউয়ের আছড়ে পড়া সময়ের অপেক্ষামাত্র। তখন ভয়ঙ্কর ডেঙ্গি ছড়াচ্ছে উত্তরপ্রদেশে। সবচেয়ে খারাপ অবস্থা যোগীরাজ্যের ফিরোজাবাদ জেলার। এবার সেখানে জেলা প্রশাসনের এক অফিসারের গাড়ির সামনে বসে পড়ে কাতর আর্জি জানাতে দেখা গেল এক মহিলাকে। সোমবার সন্ধ্যায় ফিরোজাবাদের হাসপাতালে শুয়ে মারণ ডেঙ্গুর সঙ্গে লড়াই চালাচ্ছিল ১১ বছরের বৈষ্ণবী কুশওয়াহা। সেই সময় হাসপাতাল পরিদর্শনে এসেছিলেন জেলা প্রশাসনের উচ্চপদস্থ এক অফিসার। বৈষ্ণবীর দিদি নিকিতা কুশওয়াহা আচমকাই অফিসারের গাড়ির সামনে বসে পড়েন। তিনি আর্জি জানান, স্যার আমার বোনকে বাঁচান।
ভাইরাল হওয়া এক ভিডিয়ো ক্লিপে দেখা গিয়েছে, আগ্রার ডিভিশনাল কমিশনার অমিত গুপ্তর গাড়ির সামনে বসে পড়েছেন নিকিতা। তিনি বলছেন, ‘প্লিজ স্যার…কিছু একটা করুন…নাহলে আমার বোন মারা যাবে। প্লিজ ওর চিকিৎসার ব্যবস্থা করুন।’ নিকিতার অভিযোগ, ফিরোজাবাদের সরকারি হাসপাতালে ঠিকমতো চিকিৎসা হচ্ছে না। নিকিতা অফিসারকে বলছিলেন, ‘আমি আপনাকে যেতে দেব না…।’ এমন সময় দুই মহিলা পুলিশ অফিসার তাঁকে জোর করে সরিয়ে আনতে চেষ্টা করেন। একজন পুরুষ পুলিশ অফিসার ও কমিশনার নিকিতাকে শান্ত করতে চেষ্টা করেন। হাসপাতাল সূত্রে খবর, ওই ঘটনার কয়েক ঘণ্টা পরে মারা যায় বৈষ্ণবী।
এ নিয়ে শোরগোল শুরু হতেই হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত অফিসার জানান, বৈষ্ণবীর চিকিৎসার কোনও ত্রুটি হয়নি। তাঁর দাবি, ‘মেয়েটির রোগ ছিল জটিল। তার লিভার বেড়ে গিয়েছিল। পেটে তরল জমেছিল। পরিস্থিতির অবনতি হলে আমরা তাকে ভেন্টিলেটরের সাপোর্ট দিয়েছিলাম। আমাদের সাধ্যমতো সবকিছুই করেছি। কিন্তু তাকে বাঁচাতে পারিনি।’ উল্লেখ্য, করোনা সংকটের মধ্যেই উত্তরপ্রদেশের পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলিতে ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়েছে ডেঙ্গি। শুধু ফিরোজাবাদে গত ১০ দিনে ৪০টি শিশু-সহ ৫০ জন ডেঙ্গিতে মারা গিয়েছেন। পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের অপর যে জেলাগুলিতে ডেঙ্গু বেশি ছড়িয়েছে, তার মধ্যে আছে মথুরা ও আগ্রা। সেখানে হাসপাতালগুলিতে জ্বর ও ডিহাইড্রেশন নিয়ে ভর্তি হয়েছে বহু শিশু।