করোনা পরিস্থিতিতে অনেক সংস্থা বন্ধ হয়ে যায়। সেই সব কোম্পানির কর্মীদের জন্য গত বছর মার্চ থেকে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত পিএফের টাকা তোলার নিয়মকানুন শিথিল করা হয়েছিল। ওই সুযোগেই ২ কোটি ৭১ লক্ষ টাকা সরিয়ে ফেলার অভিযোগে এমপ্লয়িজ প্রভিডেন্ট ফান্ডের তিন অফিসারের বিরুদ্ধে মামলা করল সিবিআই। ইএপিএফও-র ভিজিল্যান্স দফতরের অভিযোগের ভিত্তিতে প্রতারণার মামলা করেছে তারা। সিবিআইয়ের এফআইআরে বলা হয়েছে, মুম্বইয়ের মেসার্স বি বিজয় কুমার জুয়েলার্স ২০০৯ সালে বন্ধ হয়ে যায়। সেই সংস্থার কর্মীদের নামে ৯১ টি ভুয়ো অ্যাকাউন্টে টাকা তোলা হয়েছিল। ২০২০ সালের মার্চ থেকে ২০২১ সালের জুন মাসের মধ্যে ইপিএফের মোট ২ কোটি ৭১ লক্ষ ৪৫ হাজার ৫১৩ কোটি টাকা তছরুপ করা হয়।
গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, এই কেলেংকারির মূল চক্রী হলেন ইপিএফও-র কান্দিভালি আঞ্চলিক অফিসের সোশ্যাল সিকিউরিটি অ্যাসিস্ট্যান্ট চন্দন কুমার সিনহা। তাঁর সঙ্গে ওই ষড়যন্ত্রে যুক্ত ছিলেন কোইম্বাটুরের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রভিডেন্ড ফান্ড কমিশনার উত্তম তাগারে এবং চেন্নাই অফিসের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রভিডেন্ড ফান্ড কমিশনার বিজয় জারপে। গোপন সূত্রে এই কেলেংকারির কথা ইপিএফও-র ভিজিল্যান্স দফতর জানতে পারে ১৮ মে। তার পরেই ওই দফতর ইন্টারন্যাল অডিট শুরু করে। তাতে দেখা যায়, পেনশন তহবিল থেকে কোটি টাকার ওপর তছরুপ হয়েছে। ইপিএফও অফিসের কোনও কর্মীই ওই কাজ করেছেন। ২৪ আগস্ট সিবিআইয়ের কাছে তছরুপের অভিযোগ দায়ের করে ইপিএফও।
গোয়েন্দা সূত্রের খবর, অভিযুক্ত অফিসাররা জানতেন ইপিএফও-র দুর্বলতা কোথায়। তাঁরা আইনের ফাঁক ব্যবহার করে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নেন। এক্ষেত্রে তাঁরা পরিযায়ী শ্রমিকদের সম্পর্কে ভুয়ো তথ্য দিয়েছিলেন। কীভাবে টাকা তছরুপ করা হয়েছিল তার বিবরণ দিয়ে গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, অভিযুক্তরা পরিযায়ী শ্রমিক ও অন্যান্য গরিব মানুষের থেকে আধার কার্ড চেয়ে নিতেন। তাঁদের নামে ভুয়ো ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলতেন। যে টাকা তাঁরা তছরুপ করতেন, তার সামান্য অংশ আধার কার্ডের মালিকদের দিতেন কমিশন হিসাবে। তাঁদের শ্রমিক হিসাবে দেখানো হত। ইপিএফও অফিসকে বলা হত, অতিমারীতে তাঁদের কারখানা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। অভিযুক্তরা জানতেন, একসঙ্গে পাঁচ লক্ষের বেশি টাকা তুলতে গেলেই ইপিএফও-র সন্দেহ হবে। তখন কোনও অফিসার তদন্ত করবেন। তাই তাঁরা একসঙ্গে দুই-তিন লক্ষের বেশি টাকা তুলতেন না।