কেন্দ্রের মতো রাজ্যেও ক্ষমতাসীন বিজেপি। অথচ ডবল ইঞ্জিন সরকার থাকার পরেও যোগীরাজ্যে সরকারি স্বাস্থ্যবিমা ইএসআই পরিষেবা থেকে বঞ্চিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত হাজার হাজার শ্রমিক, কর্মচারী। হ্যাঁ, উত্তরপ্রদেশের প্রায় অর্ধেক জেলায় এখনও পর্যন্ত জারিই হয়নি ইএসআই কর্মসূচী কার্যকর করার বিজ্ঞপ্তি। ২০২২ সালের ৩১ মার্চের মধ্যে এর বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে ইতিমধ্যেই নির্দেশিকা জারি করেছে শ্রমমন্ত্রকের আওতাধীন কর্মচারী রাজ্য বিমা নিগম (ইএসআইসি)। আগামী বছর উত্তরপ্রদেশে গুরুত্বপূর্ণ বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে। ডবল ইঞ্জিন সরকারের রাজ্যেই সরকারি স্বাস্থ্যবিমা কর্মসূচীর এই হাল ভোটবাক্সে কতটা প্রভাব ফেলবে, আপাতত তার হিসেব নিকেশ করতেই ব্যস্ত হয়ে পড়েছে কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপি।
তবে শুধুমাত্র উত্তরপ্রদেশই নয়। উত্তরাখণ্ড, মধ্যপ্রদেশ, গুজরাতের মতো বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির অনেক জেলাতেই এখনও ইএসআই কর্মসূচী কার্যকরের বিজ্ঞপ্তি জারিই করা হয়নি। অর্থাৎ, এক্ষেত্রে ডবল ইঞ্জিন রাজ্যগুলির অবস্থা তথৈবচ। এই ইস্যুতে অবিলম্বে পদক্ষেপ করতে সংশ্লিষ্ট প্রতিটি রাজ্যের মুখ্যসচিব অথবা অতিরিক্ত মুখ্যসচিবদের চিঠি দিয়েছে ইএসআই। উল্লিখিত নির্দেশিকায় ইএসআই জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত সারা দেশে ১৫৩টি জেলায় এই সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি জারি করা সম্ভব হয়নি। ‘ভিশন ২০২২’-এর লক্ষ্যে যে কাজ ২০২০-২১ আর্থিক বছরে শেষ করার কথা ছিল, তা বাস্তবায়িত হয়নি। স্পষ্ট বলে দেওয়া হয়েছে, ২০২১-২২ আর্থিক বছরে বকেয়া কাজ শেষ করতেই হবে।
এই লক্ষ্যে ইতিমধ্যেই রাজ্যগুলির জন্য টার্গেটও বেঁধে দিয়েছে ইএসআই। এক্ষেত্রে উত্তরপ্রদেশের মোট ৩৪টি জেলাকে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে মাত্র একটি জেলায় ইএসআই স্কিম কার্যকরের জন্য আংশিক বিজ্ঞপ্তি জারি করা সম্ভব হয়েছে। বাকি জেলাগুলোতে কোনও বিজ্ঞপ্তি জারিই হয়নি। ফলে যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও ওইসব জেলার প্রতিষ্ঠানগুলোতে কর্মরত হাজার হাজার শ্রমিক, কর্মচারী ইএসআই পরিষেবা পাচ্ছেন না। যেমন পিলভিট জেলায় ইএসআই কর্মসূচী কার্যকরের বিজ্ঞপ্তি জারি হলে ৩ হাজার ৮৬৫ জন কর্মচারী ইএসআই-এর আওতায় আসবেন। শামলির ক্ষেত্রে সংখ্যাটি ২ হাজার ৭০৭।
আবার আম্বেদকর নগরের ক্ষেত্রে এই সংখাটি প্রায় ১০ হাজার। ফলে ৩৪টি জেলাকে এভাবে যুক্ত করলে ইএসআইয়ের আওতায় আসার যোগ্য শ্রমিক-কর্মচারীর সংখ্যা কত, তা সহজেই অনুমেয়। ওই নির্দেশিকা থেকে দেখা যাচ্ছে, গুজরাতের ৩২টি জেলায় সম্পূর্ণ বিজ্ঞপ্তি জারি হয়নি। কিছু ক্ষেত্রে আংশিক জারি হয়েছে। মধ্যপ্রদেশের ৩০টি জেলা ও উত্তরাখণ্ডের সাতটি জেলায় বিজ্ঞপ্তি জারির প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয়নি। শুধুমাত্র গুজরাতের কচ্ছ জেলাতেই ইএসআই কর্মসূচী কার্যকরের বিজ্ঞপ্তি জারি হলে এক লক্ষ শ্রমিক-কর্মচারী এর আওতায় আসবেন। প্রতিটি ক্ষেত্রেই বিজ্ঞপ্তি জারির প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার সময়সীমা দেওয়া হয়েছে আগামী ৩১ মার্চ।