ফের বিজেপি শাসিত মধ্যপ্রদেশে মধ্যযুগীয় বর্বরতার ছবি! খরার মতো পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় বরুণদেবতাকে তুষ্ট করতে ৬ নাবালিকাকে নগ্ন করে সারা গ্রামে ঘোরানো হল। সেই অবস্থাতেই তাদের দিয়ে করানো হল ভিক্ষা। গ্রামবাসীদের বিশ্বাস, এর জেরে বৃষ্টির দেবতা সন্তুষ্ট হবেন। ঘটনাটি ঘটেছে মধ্যপ্রদেশের ডামোহ জেলার বনিয়া গ্রামে।
জানা গিয়েছে, বৃষ্টি না হলে জমিতে ভাল ফসল হবে না। তাই বৃষ্টির দেবতাকে তুষ্ট করার জন্য নাবালিকাদের এভাবে নগ্ন করে গোটা গ্রামে ঘোরানো হয়েছে। গ্রামের প্রত্যেক বাড়িতে নাবালিকাদের নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন মহিলারা। নাবালিকাদের কাঁধে বল্লমের মতো একটি কাঠ দেওয়া হয়। যাতে ব্যাং বাঁধা ছিল। আরেক কাঁধে ভারী পাথরও দেওয়া হয়। এগুলি নিয়েই বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভিক্ষে করতে হয় নাবালিকাদের। এদের মধ্যে একটি মেয়ের বয়স নাকি মাত্র পাঁচ বছর। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গ্রামের সমস্ত বাড়িতে গিয়ে চাল, গম ডাল সংগ্রহ করে আনতে হয় নাবালিকাদের। সেগুলি এনে গ্রামের মন্দিরে উৎসর্গ করতে হয়। তা রান্না করেন গ্রামবাসীরা। এই অনুষ্ঠানে গ্রামের প্রত্যেককে উপস্থিত থাকতে হয়। আর বৃষ্টির দেবতার প্রসাদ হিসেবে ভোগ গ্রহণ করতে হয়।
অন্যদিকে, দামোর পুলিশ সুপার ডিআর তেনিয়ার জানিয়েছেন, বৃষ্টির আশায় স্থানীয় রীতি হিসাবে কয়েক জন কিশোরীকে নগ্ন করে ঘোরানোর খবর পুলিশের কাছে এসেছে। ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার। তিনি বলেছেন, ‘পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। জোর করে ওই কিশোরীদের নগ্ন করা হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ তিনি আরও জানিয়েছেন, স্থানীয়দের মধ্যে বৃষ্টি নিয়ে কিছু ধর্মীয় বিশ্বাস রয়েছে। এই বিশ্বাস অনুযায়ী, কমবয়সী মেয়েদের নগ্ন করে ঘোরানো হয়। বড়রা ভজন গাইতে গাইতে তাঁদের সঙ্গে ঘোরেন। তাঁরা মনে করেন, এতেই সন্তুষ্ট হবেন বৃষ্টির দেবতা। এই ঘটনার কথা সামনে আসতেই নড়েচড়ে বসেছে জাতীয় শিশু অধিকার রক্ষা কমিশন(এনসিপিসিআর)। তাদের কাছে খবর পৌঁছতেই কমিশনের পক্ষ থেকে দামোর জেলা প্রশাসনের কাছে বিস্তারিত রিপোর্ট চেয়ে পাঠানো হয়েছে।