আসছে করোনার তৃতী ঢেউ। আর কয়েক দিনের মধ্যেই ভারতে শিশুদের কোভিডের টিকা দেওয়া শুরু হবে। এর মধ্যে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে এক সমীক্ষক দল জানাল, বিসিজি, পোলিও, হাম এবং ডিপিটি-র টিকা ভারতে যথেষ্ট সংখ্যক শিশু পায়নি। বহু শিশু ভ্যাকসিনের একটি ডোজ নিয়েছে। কিন্তু পরের ডোজগুলি নেয়নি। সমীক্ষকদের ধারণা, প্রথম ডোজের পরে শিশুদের বাবা-মায়েরা বাকি ডোজগুলি দেওয়ার উৎসাহ হারিয়ে ফেলেছিলেন। সম্ভবত বাচ্চাকে টিকা দেওয়াতে নিয়ে গিয়ে কোনও সমস্যার মুখে পড়েছিলেন তাঁরা।
প্রসঙ্গত, টিকা নিলে যে রোগগুলির হাত থেকে মুক্তি পাওয়া যায় এমন রোগে এখনও প্রতি বছর বিশ্বে মারা যায় ২০ লক্ষের বেশি শিশু। ন্যাশনাল ফ্যামিলি হেলথ সার্ভে অনুযায়ী, ২০১৬ সালে দেশে ৬২ শতাংশ শিশু সব টিকা নিয়েছিল। এর আগে সমীক্ষায় জানা গিয়েছিল, নানাভাবে উৎসাহ দিয়ে, বার বার মনে করিয়ে দিয়ে এবং এলাকায় ‘ভ্যাকসিন অ্যাম্বাসাডর’ নিয়োগ করে টিকাকরণের হার বাড়ানো যায়। অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় ও অপর নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ এস্থার ডাফলোর সমীক্ষকদল হরিয়ানার সাতটি জেলায় সমীক্ষা করে দেখেছে, ওই পদ্ধতিতে সত্যিই টিকাকরণ বৃদ্ধি পেয়েছে কিনা। উক্ত সমীক্ষার রিপোর্ট অনুযায়ী, হরিয়ানা সরকার টিকাকরণে বিপুল অর্থ ব্যয় করেছে বটে, কিন্তু তা সত্ত্বেও কয়েকটি জেলায় বহু শিশু প্রতিষেধক নেয়নি। সেখানে ১২ থেকে ২৩ মাস বয়সী শিশুদের ৮৬ শতাংশ তিনটি টিকা নিয়েছে। শিশুদের মাত্র ৩৯ শতাংশ সবক’টি টিকা নিয়েছে। ১৫ মাস বয়স হওয়ার আগে হামের টিকা নিয়েছে ২০ শতাংশেরও কম শিশু।
৭০ টি পাবলিক হেলথ সেন্টারে সমীক্ষা চালিয়ে দেখা গেছে, কোনও শিশুকে তার বাবা অথবা মা টিকা দিতে আনলে তাঁকে মোবাইল কেনার টাকা দেওয়া হয়েছে। মোবাইলে বারবার টেক্সট মেসেজ এবং ভয়েস কল পাঠিয়ে সন্তানকে দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার কথা মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি গ্রামে কয়েকজনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে যাতে তাঁরা শিশুসন্তানদের বাবা-মাকে টিকার কথা মনে করিয়ে দেন। সমীক্ষায় দেখা যায়, প্রতিটি গ্রামে এমন ছ’জনকে নিয়োগ করা হয়েছে। এই ভ্যাকসিন অ্যাম্বাসাডরদের প্রতি মাসে টেক্সট মেসেজ এবং ভয়েস কলের মাধ্যমে মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে যাতে তাঁরা শিশুদের বাবা-মাকে টিকার কথা মনে করিয়ে দেন। এভাবে টিকাকরণের হার বাড়ানো গিয়েছে ৫৫ শতাংশ।