ত্রিপুরায় ক্রমশ অস্বস্তি বাড়ছে বিজেপির। রবিবার শিক্ষক দিবসে পথে নামলেন শিক্ষকরাই। আর এতেই মাথাব্যথা বেড়েছে বিপ্লব দেবের সরকারের। বিজেপি সরকারকে কটাক্ষ করতে সময় নেয়নি তৃণমূল। এ রাজ্যের শাসক দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ ট্যুইটে শিক্ষকদের প্রতিবাদের ছবি পোস্ট করে লেখেন, “ত্রিপুরা। শিক্ষক দিবসে অসহায় ১০,৩২৩ জন শিক্ষকশিক্ষিকা যুক্তমঞ্চের মিছিল। আইনি জটে নিয়মিত চাকরি থেকে কর্মচ্যুত। বিজেপি নির্বাচনী ইস্তাহারে এঁদের সমস্যার সমাধানের কথা বললেও এখন পুলিশ পাঠিয়ে লাঠি চালায়। চূড়ান্ত বিপর্যস্ত হয়ে বাঁচার লড়াই চালাচ্ছেন এঁরা। তৃণমূল পাশে থাকবে।” ইতিমধ্যেই আন্দোলনরত শিক্ষকদের পাশে ইতিমধ্যেই দাঁড়িয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস৷ ত্রিপুরায় পা রেখেই আন্দোলনরত এই শিক্ষকদের সঙ্গে দেখা করেছেন উত্তর-পূর্বে তৃণমূলের উল্লেখযোগ্য মুখ সুস্মিতা দেব৷
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে ত্রিপুরার বিপ্লব দেবের সরকার ১০,৩২৩ চাকরি আটকে থাকা শিক্ষকদের জন্য স্থায়ী সমাধান আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েই ক্ষমতা দখল করেছিল। কিন্তু মাত্র দু’বছর পরে, করোনা অতিমারী শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই, ২০২০ সালের মার্চ মাসে, সুপ্রিম কোর্টের অনুমোদিত মেয়াদ শেষ হওয়ার পরে সেগুলি বাতিল করা হয়।
২০২০ সালের এপ্রিল মাসে অবশ্য ত্রিপুরা সরকার চাকরি হারানো ৮,৮৮২ জন শিক্ষককে মাসিক ৩৫,০০০ টাকা ভাতা দেওয়ার ঘোষণা করেছিল। কিন্তু সেই ভাতা মাত্র এক মাস দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। মোট ১০,৩২৩ জন স্নাতক, স্নাতকোত্তর এবং অস্নাতক শিক্ষককে ২০১০ সাল থেকে বিভিন্ন পর্যায় ত্রিপুরা সরকারি স্কুলে অন্তর্ভুক্ত করেছিল বাম সরকার। কিন্তু তা নিয়ে মামলা দায়ের হয়েছিল। আর সেই মামলার রায়েই আদালত এই নিয়োগকে অসাংবিধানিক বলে ঘোষণা করেছিল।
২০১৭ সালেও সে রাজ্যের সরকার একটি বিশেষ আবেদন করেছিল। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট হাইকোর্টের পুরনো রায়ই বহাল রেখেছিল। শিক্ষকদের অভিযোগ, বিপ্লব দেবের সরকার তাদের সমস্যা সমাধানের জন্য একটি নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু তিন বছর পরেও সেটিও পূরণ করেনি। আর এই পরিস্থিতিতেই আসরে নেমেছে তৃণমূল। তাঁদের অভিযোগ, শুধু এই ১০,৩২৩ জন শিক্ষকই নন, সর্বশিক্ষা মিশনের অধীনে আরও ৫,৪৩৭ জন শিক্ষকের চাকরি ঝুলে আছে বিপ্লব দেবের সরকারের আমলে। ত্রিপুরায় গত ১৫ বছরে নিয়োগপ্রাপ্ত এই শিক্ষকরা আমলাতান্ত্রিক সমস্যা এবং সরকারের ত্রুটিপূর্ণ নীতির কারণেই বেকার হয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছে।